রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ২বারের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা ও পৌরসভার সাবেক মেয়র জমির উদ্দিনসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে রবিবার (৯ মার্চ) বাঘাইছড়ি থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এটি রাঙামাটিতে ৫ আগস্টের পর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম দলীয় মামলা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
মামলায় বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, আমতলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪০-৫০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন আসামিদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন, কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন, হারুন, আব্দুল গফুর সুবেল, মামুনুর রশিদ, শামীম, ইয়াছিন রানা, তরিকুল ইসলাম সোহেল, ইমরান হোসেন, ইউনুছ আলী, আনোয়ার হোসেন বাপ্পী, আজগর আলী, আব্দুল জলিল ফাহিম, ইমরুজ তামিম জিসান, সাইফুল ইসলাম খান, নাছির উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম মিঠুসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকেই। দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৪৩৫/১০৯/১১৪/৩৪/৫০৬(২) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়। পুলিশ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, আসামিদের মধ্যে ১৩ নম্বর আসামি তরিকুল ইসলাম সোহেলকে (৩৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। এরআগে অন্য আরেকটি মামলায় আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীকে ৮মার্চ চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর মাঠে বিএনপির সমাবেশ চলাকালে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে উপস্থিত হলে প্রধান আসামির নির্দেশে দলবদ্ধ হয়ে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাদীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গুরুতর জখম করা হয়। এছাড়া হামলার সময় ১৫টি মোবাইল ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদী আরও অভিযোগ করেন, হামলার সময় আসামিরা হুমকি দেয়, ভবিষ্যতে বিএনপির কোনো সমাবেশ করার চেষ্টা করলে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হবে। হামলার পর আহত নেতাকর্মীরা বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। স্বৈরাচারী সরকারের দোসর থাকায় তৎকালীন সময়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।