জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মজিদ হোসেনের পরিবারের কাছে সরকারের ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ঈদ উপহার হস্তান্তর করলেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার রসুলপুরস্থ শহীদ মজিদ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্য মা ও ভাইয়ের হাতে সরকারের দেওয়া দশ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ইফাদ গ্রুপের সৌজন্যে জুলাই ফাউন্ডেশনের ঈদ উপহার হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ, রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন, রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ছাত্র প্রতিনিধি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানা গেছে, জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার শহীদ মো. মজিদ হোসেন (১৬ বছর)। মজিদ ছিলো ট্রাকের হেল্পার। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে রেলস্টেশনে পার্ক করে রাখা ট্রাকে মজিদ ঘুমে ছিলো। এ সময় পেট্রোল বোমাতে দগ্ধ হন মজিদ। তাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত মজিদকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২৫ জুলাই সে শাহাদাৎ বরণ করেন।
খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়ার রসুলপুরের বাসিন্দা মো. মজিদ হোসেন (১৬)। পিতা মতিন মিয়া অসুস্থতায় শারীরিকভাবে অক্ষম। মজিদ পিতার মেজো ছেলে। বড় ভাই মহিনও পরিবহন শ্রমিক। তার স্বল্প আয়ে দরিদ্র পরিবারের ঠিকমত আহার জুটতো না। এ অবস্থায় কিশোর মজিদ লেখাপড়া ছেড়ে ২০২৪ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে গিয়ে ট্রাকের হেলপার হিসেবে চাকরি নেয়। দুই ভাইয়ের আয়ে বাবা, মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে কোন রকমে চলতো পরিবারটি।
এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন। ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে ভাড়ায় মালামাল নিয়ে ট্রাকে করে মজিদ চলে যায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। ঐদিনই মালামাল আনলোড করে খালি ট্রাক নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। হাজীগঞ্জ রেললাইন পার হতেই আটকা পড়ে তাদের গাড়ি। এ সময় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয় ট্রাকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই দাউ-দাউ করে আগুনে ভস্মীভূত হয় ট্রাকটি। গাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয় কিশোর মজিদ।