কোরবানি ঈদের দিন সকালে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সুযোগে কতিপয় ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চকরিয়া পৌরসভার সবুজবাগ এলাকায় হামলা চালিয়ে একটি পরিবারের বসতবাড়ি ভেঙে ও কুপিয়ে তছনছ করে দিয়েছে। ওইসময় হামলাকারীরা পরিবারটির নারী সদস্যদের অস্ত্রের মুখে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে জিন্মি করে দিনেদুপুরে এ নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঘটেছে এ হামলা তান্ডবের ঘটনা।
আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তা সায়েদ মোহাম্মদ নাছির জানিয়েছেন, চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ এলাকায় চিরিঙ্গা মৌজার মূল বিএস ৭০ নং খতিয়ানের সৃজিত বিএস ৮১১ নং খতিয়ানের ৬৩ দাগের আমার পিতা মৃত নুরুল ইসলামের নামে দুই খন্ডে প্রায় ৪৬ কড়া জমি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ছোট খন্ডের প্রায় ১০ কড়া জায়গার চারপাশে টিনের ঘেরা দিয়ে ভোগদখলে রয়েছেন তার পরিবার।
সম্প্রতি সময়ে ভুয়া খতিয়ান সৃজন করে সবুজবাগ এলাকায় আমাদের দখলীয় উক্ত ১০ কড়া জমি জবরদখলের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে চকরিয়া উপজেলার পশ্চিমবড় ভেওলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দরবেশকাটার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীনের পুত্র মমতাজ উদ্দিন আকতার ও তারেকুল ইসলামের গংয়ের। এরই জেরে বেশকিছু দিন ধরে অভিযুক্ত ভূমিদস্যুদের নেতৃত্বে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের জমি জোর করে জবরদখলের জন্য নিয়মিত অস্ত্রের মহড়া দিয়ে আসছে।
জমি মালিক মরহুম নুরুল ইসলামের ছেলে সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, শনিবার ৭ জুন সকালে আমরা (পরিবারের পুরুষ সদস্যরা) ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে চলে যাই। ওই সুযোগে অভিযুক্ত মমতাজ উদ্দিন আক্তার, তারেকুল ইসলাম ও ফুলতলার লেডা গিয়াসের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিত সবুজবাগস্থ আমাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও কুপিয়ে বাড়ির ঘেরাবেড়া তছনছ করে দিয়েছে।
নুরুল ইসলামের অপর ছেলে নাছির উদ্দিন বলেন, গত ৭ মে অভিযুক্ত ভূমিদস্যু মমতাজ উদ্দিন আক্তার গংয়ের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং ১১৭/২০২৫। আদালত উক্ত বিষয়ের আলোকে চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। পাশাপাশি চকরিয়া থানার ওসিকে ওই জায়গাতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন।
কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে ভূমিদস্যুরা। সর্বশেষ শনিবার সকালে আমরা যখন ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে যাই, তখন সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা চালিয়ে মমতাজ ও তারেক গং আমাদের বাড়িটি ভেঙে ও কুপিয়ে তছনছ করে দিয়েছে। ঘটনার সময় চকরিয়া থানার একটি টহল পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এখন মমতাজ গং উল্টো চকরিয়া থানায় টাকা দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পুনরায় হামলা তান্ডব চালিয়ে আমাদের বাড়িঘর উচ্ছেদ করে দিয়ে জায়গা দখলে নেবে বলে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগি পরিবারটি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।