চন্দনাইশ-সাতকানিয়া সীমান্ত এলাকার দ্বীপ চরতী সবিরচর নামক স্থানে গ্যাস ক্রসফিলিং গুদামে গ্যাস ক্রসফিলিং করার সময় সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ ১০ জনের মধ্যে ২ জন যুবক শ্রমিক মারা গেছে। ঢাকার বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তারা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন তাদের স্বজনরা। মারা যাওয়া ২ শ্রমিক হলো চন্দনাইশের ছৈয়দাবাদ এলাকার নাসির উদ্দীনের ছেলে মোঃ ইদ্রিস (২৬) ও কক্সবাজার জেলার মোঃ ইউসুফ (৩০)।
মারা যাওয়া ইদ্রিসের ছোট ভাই মোঃ আবু তালহা জানান, ওই গুদামে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে তার বড় ভাইসহ অন্যরা দগ্ধ হওয়ার পর তাদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে তার বড় ভাই ইদ্রিসসহ ৪ জনকে ঢাকার বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাদের ঢাকায় স্থানান্তর করা হলেও ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পায়নি তারা। ঢাকায় নিয়ে আহতদের ফ্রি চিকিৎসা করানোর জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করে বসে থাকেন গুদামের মালিকপক্ষ।
পরবর্তীতে আহতদের প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য ওই গুদামের মালিকপক্ষ ঠিকমতো টাকা পয়সাও দেয়নি। তারপরও তারা নিজেদের টাকা দিয়ে ওষুধ খরচ চালিয়েছে। এরপরও বাঁচানো গেলোনা দগ্ধ দুই শ্রমিক ইদ্রিস ও ইউসুফকে। এদিকে শ্রমিক ইউসুফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাবেক চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের চন্দনাইশ মানবিক টিমের প্রধান মাওলানা মোঃ সোলাইমান ফারুকী। উল্লেখ্য, চন্দনাইশের বৈলতলী ইউনিয়নের দক্ষিণ বৈলতলী ভুইয়া বাড়ি এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে মাহাবুবুল আলমসহ একটি সিন্ডিকেট প্রায় ১ বছর পূর্ব থেকে সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড দ্বীপ চরতী সর্বির চর নামক নির্জন এলাকায় গ্যাস ক্রসফিলিং কারখানা গড়ে তোলে।
একটি বড় সেমিপাকা গুদাম ঘরে তারা গ্যাসের সরকারি বড় বোতল থেকে ছোট বোতলে গ্যাস ক্রসফিলিং করে বাজারজাত করে আসছিল চক্রটি। গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ওই গুদামে হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হন মাহাবুবুল আলম (৪৭), শ্রমিক মোহাম্মদ ইউসুফ (২৬), মোহাম্মদ আকিব (১৭), মো. হারুন (২৯), মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩০), মোহাম্মদ কফিল (২২), মোহাম্মদ রিয়াজ (১৭), মো. সৌরভ রহমান (২৫), মোহাম্মদ লিটন (২৮) ও মোহাম্মদ ছালেহ (৩৩)। খবর পেয়ে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পানি নিক্ষেপ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।