চলতি শিক্ষাবর্ষের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলায় শিক্ষার মান নিয়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার দুটি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—রাজস্থলী সরকারি কলেজ ও বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজ—এবারের পরীক্ষায় আশঙ্কাজনকভাবে কম ফলাফল করেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজস্থলী সরকারি কলেজে মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে মাত্র ১৪ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে, যা শতকরা ১০.৮৫ শতাংশ। অপরদিকে, বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজের ১৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কেবল ১৮ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে, পাশের হার ৯.১৮ শতাংশ। দুই কলেজেরই ফলাফল স্থানীয় শিক্ষা অঙ্গনকে হতবাক করে দিয়েছে।
ফলাফলের এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পারস্পরিক উদাসীনতা, শিক্ষার্থীদের পাঠে অনীহা এবং পাঠদানে গাফিলতিকে দায়ী করছেন। অনেকে বলছেন, সঠিক তদারকি ও শিক্ষার্থীদের মানসিক অনুপ্রেরণা না থাকায় ফলাফল এই পর্যায়ে নেমে এসেছে।
স্থানীয় অভিভাবক নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা সন্তানদের পড়াশোনায় আগ্রহী করতে পারিনি, আবার কলেজ থেকেও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে ফলাফল এমন হওয়াটা আশ্চর্যের কিছু না।”
রাজস্থলী সরকারি কলেজের এক শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, “শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম, নিয়মিত পাঠচক্রে অংশগ্রহণ করে না। এছাড়া পরীক্ষার আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নেওয়ার ফলেই এই বিপর্যয়।”
অভিভাবক ও সচেতন মহল মনে করছেন, এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে আগামী বছরগুলোতে রাজস্থলীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়বে। তাই তারা প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজস্থলী ও বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি ফলাফল শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নয়, পুরো এলাকার শিক্ষার মানের একটি সতর্ক সংকেত। সময়মতো উদ্যোগ না নিলে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ নিবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অভিভাবকরা।