কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়ায় ঝাউবন ও প্যারাবন রক্ষার লক্ষ্যে নতুন করে ‘সোনাদিয়া বন বিট’ চালু করেছে বন বিভাগ। বিট কর্মকর্তা ও একাধিক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে বনের নিরাপত্তা জোরদার করার কথা থাকলেও বাস্তবে উল্টো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। বিট চালুর পর থেকেই ঝাউবন কেটে বনের জমি দখল করে অবৈধ কটেজ নির্মাণে নেমেছে একদল অসাধু ভূমিদস্যু ও ব্যবসায়ী।
স্থানীয়দের অভিযোগ—বনের নতুন বিট চালুর সুযোগে ৫ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে মহেশখালী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সানজিমুন হক, গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আয়ুব আলী এবং সোনাদিয়া বিট কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে ঝাউগাছ কেটে তিনতলা বিশিষ্ট একটি কটেজসহ একাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে ভূমিদস্যুরা। যদি অবৈধভাবে স্থাপিত নতুন ও পুরাতন কটেজ গুলো উচ্ছেদ করা না হয় তাহলে অচিরেই সোনাদিয়ার ঝাউবন উঝাড় হয়ে যাবে।
অভিযুক্তের একটি পক্ষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, “বন বিভাগকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মৌখিক অনুমতি নিয়ে আমরা কটেজ নির্মাণ শুরু করেছি। পর্যটকদের সুবিধার কথা ভেবেই কটেজগুলো করা হচ্ছে।” তারা আরও দাবি করে—বিট চালুর পর দ্রুত কটেজ নির্মাণে নাকি মৌখিক সম্মতি দেন এসিএফ সানজিমুন হক ও রেঞ্জ কর্মকর্তা আয়ুব আলী।
অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঝাউবন ও প্যারাবন রক্ষার স্বার্থেই মন্ত্রণালয়ে তদবির করে সোনাদিয়া বিট চালু করা হয়। কিন্তু বন বিভাগ মাঠে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো সহযোগিতা করছে না; বরং রহস্যজনক নীরবতার কারণে বনের জমি দখল করে অবৈধ কটেজ নির্মাণ বন্ধ করা যাচ্ছে না। শীঘ্রই বড়সড় করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাসহ একাজে বন কর্মকর্তাদের কেউ এতে জড়িত কিনা—তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও সূত্র জানায়।
পরিবেশকর্মীরা জানান- বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা সোনাদিয়ায় বনগুলো বেজার বলে তারা গোপনে ভূমিদস্যুদের সাথে আতত করে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিয়ে বন উঝাড় করে কটেজ নির্মাণের কাজে সহযোগিতা করে। না হয় নতুন করে সোনাদিয়া বিট চালু হওয়ায় পর পর কিভাবে বনের ঝাউগাছ কেটে কটেজ নির্মাণ করে? অচিরেই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে সোনাদিয়ায় জৈববৈচিত্র ও পরিবেশ ধ্বংস হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসিএফ সানজিমুন হককে মুঠোফোন কল দিলেও রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “সোনাদিয়ায় নতুন বিট চালু করা হয়েছে, কিন্তু তাদের উপস্থিতিতে নতুন করে কটেজ নির্মাণ হওয়া খুবই রহস্যজনক। আমাকে তারা কিছুই জানায়নি। বিষয়টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। নৌবাহিনীসহ যৌথবাহিনী নিয়ে শিগগিরই বড় অভিযান চালানো হবে এবং সব অবৈধ কটেজ উচ্ছেদ করা হবে।


















