ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে রাঙামাটির সাংবাদিক ফজলে এলাহীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাত টার দিকে কাঠালতলি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সনি-র্যাংগস শো-রুম থেকে গ্রেফতার করা হয় এলাহীকে।
এলাহী বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি, দৈনিক কালের কন্ঠ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, সুপ্রভাত বাংলাদেশ এবং রেডিও টুডে এর রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
এছাড়া তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং অনলাইন পাহাড়২৪ ডটকমের সম্পাদকও।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাঙামাটি কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যনালের এক মামলায় প্রসেস নং ৮১৭/২২ মুলে এলাহীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা আসে। পরোয়ানা আসার পর কোতয়ালী পুলিশ তাকে কাঠালতলি থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।
এ মামলার বাদী নাজনীন আনোয়ার। তিনি রাঙামাটি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে।
ফজলে এলাহীকে থানায় নেওয়া হলে রাঙামাটি সাংবাদিকরা ছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ থানায় ভিড় করেন। থানায় নিয়ে ফজলে এলাহীকে রাখা হয় ওসি তদন্ত আফজাল হোসেনের কক্ষে।
সেখানে ফজলে এলাহী এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০২১ সালে ডিসি বাংলো পার্ক এলাকায় পাইরেটস রেস্টুরেন্ট সংক্রান্ত এক নিউজের কারণে নাজনীন আনোয়ার রাঙামাটির আদালতে একটি অভিযোগ দেন। সেখানে প্রথম আসামী ছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ মামুন। আমাকে দ্বিতীয় আসামী করা হয়। এটি আদালত তদন্তের জন্য পুলিশের কাছে পাঠায়। পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আমি এটা জানি। এটি নিস্পত্তি হয়েছে আমি জানি। এর পরে কী গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হল এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে গ্রেফতারের সময় পুলিশের সাথে চিনু আপার মেয়ে ছিল। তাকে খুব এগ্রেসিভ মনে হয়েছে।
পুলিশের গ্রেফতারী পরোয়ানায় রাঙামাটি কোতয়ালী থানার একটি জিডির কথা উল্লেখ আছে। যার নম্বর ৭৯৫। এ জিডি মুলে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করে নাজনীন আনোয়ার। যার মামলা নং ২৮/২১।
রাঙামাটির কোতয়ালী থানার ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ সালে করা জিডিতে নাজনীন আনোয়ার অভিযোগ করেন, ডিসিবাংলো পার্ক গ্রহীতাকে নিয়ে ফজলে এলাহী প্রচুর মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ মোতাবেক অপরাধ।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি তদন্ত আফজাল হোসেন বলেন, এ জিডি মুলে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে নাজনীন আনোয়ার।
এ ব্যাপারে নাজনীন আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কোতয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, আমরা এলাহীকে গ্রেফতার করেছি। আজ যেহেতু আদালতে তোলার সময় নেই সেহেতু আগামীকাল (বুধবার) তাকে রাঙামাটি আদালতে তোলা হবে। সেখান এলাহীর জামিন মঞ্জুর হবে নাকি চট্টগ্রামে পাঠানো হবে তা বিজ্ঞ আদালত আদেশ দেবেন। আদালতে না তোলা পর্যন্ত এলাহী পুলিশের হেফাজতে থাকবে।
এদিকে এলাহীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবীতে বুধবার সকাল ১০ টায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জেলা সাংবাদিকরা।