বুধবার , ২৬ জানুয়ারি ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন আজ সমৃদ্ধির স্বপ্ন জাগানিয়া ‘নানিয়ারচর সেতু’

প্রতিবেদক
পাহাড়ের খবর ডেস্ক
জানুয়ারি ২৬, ২০২২ ৯:২৪ অপরাহ্ণ

সমৃদ্ধির স্বপ্নজাগানিয়া ‘নানিয়ারচর সেতু’। দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে আজ বুধবার। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সকাল ১০টায় সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িসহ ছয়টি পাহাড়ি উপজেলার অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের ভাগ্য বদলাবে সেতুটি- এমন প্রত্যাশা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের। সাজেকের সঙ্গে রাঙামাটি শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হওয়ায় সমৃদ্ধ হবে পর্যটন খাত। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে পিছিয়ে পড়া পাহাড়ের কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া এই সেতু এখন পাহাড়ের সবচেয়ে দীর্ঘ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২ মিটার প্রস্থের এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন মেয়াদে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ২০ ও৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্র্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু, খাগড়াছড়ি-দিঘিনালা-বাঘাইছড়ি-সাজেকের বাসিন্দারা সেতুটির সরাসরি সুফল ভোগ করবে। পাহাড়ের আলোচিত এ সেতুর নাম ‘বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ সেতু’ রাখার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। নানিয়ারচর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রিপন দাশ বলেন, আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর মধ্যে ‘বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ’ নানিয়ারচরের মাটিতে শুয়েআছেন। এই বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার নামেই এ সেতুর নামকরণের দাবি জানাচ্ছি।
বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থার কারণে পাহাড়ের সব উপজেলা এখনো সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এর সাথে গেল শতাব্দীর মাঝামাঝি ১৯৬০ সালে ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’ নির্মাণে বাঁধ তৈরি হয়। এতে সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদের কারণে দূরবর্তী বেশ ক’টি উপজেলা ‘জলবন্দি’ হয়ে জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে যোগাযোগব্যবস্থায় একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে নৌযান। ফলে নৌযাননির্ভর পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো ‘পরিবহন ও বাজারজাত’ করা যেমন কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল, তেমনি যাতায়াতেও ছিল নানা সীমাবদ্ধতা।
রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু-বাঘাইছড়ি সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৩ সালে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানিয়ারচরে চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণে প্রকল্পটি ব্যয়বহুল হওয়ায় সে উদ্যোগ পিছিয়ে পড়ে। এর সঙ্গে সেতু নির্মাণে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতাও উল্লেখযোগ্যভাবে দায়ী এর জন্য। তবে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে বর্তমান সরকার। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। অবশেষে সাড়ে চার বছরে দৃশ্যমান হওয়া সেই স্বপ্নের সেতু আজ উন্মুক্ত হচ্ছে।
রাঙামাটি শহর থেকে সড়কপথে নানিয়ারচরের দূরত্ব প্রায় ৪০, বাঘাইছড়ি ১৫০ ও লংগদু উপজেলা প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। রাঙামাটির সঙ্গে নানিয়ারচর ছাড়া বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার কোনো বাস সার্ভিস নেই। তাই খাগড়াছড়ি হয়ে জেলা সদরে আসতে বাঘাইছড়ি থেকে সময় লাগে প্রায় ছয় ঘণ্টা। আর লংগদু থেকে পাঁচ ঘণ্টা। সরাসরি যোগাযোগের জন্য ছয়-সাত ঘণ্টা দূরত্বের নৌপথই ভরসা। নানিয়ারচর থেকে বাঘাইছড়ি ৩০ আর লংগদুর দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। তাই এ সেতু হয়ে এখন এক থেকে দেড় ঘণ্টায় জেলা সদর থেকে সরাসরি বাঘাইছড়ি ও লংগদু যাওয়া যাবে। তবে নানিয়ারচর থেকে লংগদু ১৮ কিলোমিটারের সড়কটি এখনো নির্মাণ শেষ হয়নি। ফলে লংগদু ও বাঘাইছড়িবাসী আপাতত এ সেতুর সুবিধা থেকে বঞ্চিতই থাকছেন।
নানিয়ারচর সেতু এলাকায় গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, উদ্বোধন উপলক্ষে সেনাবাহিনী সেতুর উত্তর প্রান্তে মঞ্চ তৈরি করেছে। এখান থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য আনুষঙ্গিক প্রস্তুতির সঙ্গে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। নানিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ‘আগে নদী পার হতেই ইঞ্জিন নৌকায় আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা লেগে যেত। এখন মিনিটেই সেতু পার হওয়া যায়। গতি এসেছে জীবনযাত্রায়।’ সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগ, ব্যবসাবাণিজ্য, রাজনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, ‘সেতুটির কারণে নানিয়ারচরসহ পাশের দুই উপজেলা লংগদু-বাঘাইছড়ি-সাজেক ও খাগড়াছড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ও ব্যবসাবাণিজ্যের পথ উন্মুক্ত হবে। এতে এ অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি আসবে।’

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: