সুমন্ত চাকমা, জুরাছড়ি থেকে
রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় ৬৫টি প্রাথমিক ও ছয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি এলে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় উপজেলা প্রশাসন নির্মিত শহীদ মিনারে। নিজ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে পড়তে হয় বিপাকে।
শিক্ষা কর্মকর্তা কৌশিক চাকমা অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার না তাকার কথা স্বীকার করে বলেন, স্লীপ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বিজয় দিবস, শহীদ দিবস যথাযোগ্য ভাবে পালনে নির্দেশনাও দেওয়া রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৬১টি সরকারি ও চারটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই। এছাড়া আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ভুবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ও বনযোগীছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসন নির্মিত শহীদ মিনারটি সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসন নির্মিত শহীদ মিনারটি শিশুপার্কে পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে। শহীদ মিনার অধিক সময় তাকে তালাবদ্ধ। প্রবিণ শিক্ষক ও শিক্ষানরাগি ধল কুমার চাকমা জানান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, একুশ এলেই আমরা শুধু মাতৃভাষার মর্যাদার কথা ও শহীদ দিবসের কথা বলি। এরপর ভাষা শহীদদের কথা কারো আর মনে থাকে না। তিনি আরো বলেন, বছর বছর উপজেলায় উন্নয়নের জন্য কত না বরাদ্দ আসছে! অথচ প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের তাগিদ কেউ অনুভব করছে না।
উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিদ্যালয়ের ভবন নব নির্মানের সাথে শহীদ মিনার নির্মানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, সকল ছাত্র-ছাত্রী যেন নিজ বিদ্যালয়ে শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে পারে সে লক্ষে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এ বিষয়ে আগামী উন্নয়ন সমন্বয় সভায় গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হবে।