রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলায় পৃথক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ২ উপজেলার ৬টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা বলে ধরণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে রাঙামাটি জেলা দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলার বটতলী পশ্চিম পাড়ায় ৫টি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই দাউ দাউ করে ৫টি কাচা বসতঘর পুড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকাবাসী অনেক চেষ্টা করেও আগুনের লেলিহান থেকে বসতঘরগুলো রক্ষা করতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের ধারনা বিদ্যুৎ সর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। যাদের বসতঘর আগুনে পুড়ে গেছে তারা হলেন-ওই এলাকার চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মোঃ লাবলু, নুর জামাল, রহমত আলী, আজগর ও মোঃ হোসেন।
স্থানীয় মোঃ আশিকুর রহমান ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার বটতলী পশ্চিত পাড়া একসারিতে ৫টি কাচা বসতঘরে হঠাৎ আগুন লাগতে দেখা যায়। আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা যার যার অবস্থান থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু কোন ভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। চোখের পলকে আমাদের সামনে আগুনে কেড়ে নিল ৫টি বসতঘর। আগুনের সাথে আমরা এত যুদ্ধ করার পরেও পরাজিত হলাম। কোন মতেই বসতঘরগুলো বাঁচাতে পারলাম না। স্থানীয়রা বলেন, ধারনা করা হচ্ছে এতে প্রায় ৩০লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বসতঘরের মালিক আজগর ও রহমত আলী জানান, হঠাৎ করে ঘরে আগুন লেগেছে। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই আগুনে সব ঘরগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই অগ্নিকান্ডে আমার পরিবারের ৫টি বসতঘর পুড়ে গেছে, এতে ক্ষয়- ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩০-৪০লাখ টাকা হতে পারে। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। খোলা আকাশের নিচে আমাদের থাকতে হবে।
এদিকে নানিয়ারচর উপজেলার কৈলাশচন্দ্র পাড়ায় মন্টু চাকমা (৩৮) নামে আরেক ব্যক্তির কাচা ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। সোমবার সকাল ৭টার দিকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মন্টু চাকমা তার পরিবারসহ মিলে কচুশাক উঠানোর জন্য ও গরু চড়াতে পাশের জমিতে গিয়ে ছিল। ধারনা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে। আগুন লাগার সাথে সাথে পাহাড়ি বাঙালি, স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, নানিয়ারচর জোন, স্থানীয় বিএনপিসহ আরো অনেকে। স্থানীয়রা বলছেন, কিছু কুচক্রি মহল আগুন লাগার বিষয়টি অন্যভাবে প্রবাহিত করে পাহাড়ি বাঙালির মধ্যে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। আগুন লাগানোর কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।
নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজির আলম বলেন, অগ্নিকান্ড সংঘটিত ঘরে বিস্ফোরিত একটি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। তবে কে বা কারা আগুন দিয়েছে তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে তদন্ত চলছে। ২লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হতে পারে।