রাঙামাটির লংগদুতে বাড়ি ফেরার পথে কাপ্তাই হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকা ডুবিতে এক নারী ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও এক শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে স্থানীয় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ি দল। এদিকে প্রায়ই একই সময়ে লংগদুর কাট্টলী বিল এলাকায় তিনটি মাছ ধরার নৌকা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্হানীয়রা।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আকস্মিক ঝড়ো বাতাসে লংগদু উপজেলার গুলশাখালী থেকে নৌকায় করে মাইনীমুখের এফআইডিসি এলাকায় বাড়ি ফেরার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা আছর উদ্দিন ও আরজ আলীর পরিবার। নিহতরা হলো- আছর উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪০) ও আরজ আলীর শিশু সন্তান রানা (৭)। তবে আছর উদ্দিনের নিখোঁজ স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা গেলেও শিশু মাসুম (৫) এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। মাসুমকে উদ্ধার করতে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে হঠাৎ ঝড় শুরু হলে নৌকায় থাকা ৫ জনের মধ্যে দুই শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হয়। বাকি দুজন আছর উদ্দিন ও সালমা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপর বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে নিখোঁজ নারী শিরিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এ ঘটনায় নিখোঁজ অপর শিশু মাসুমকে উদ্ধারে কাজ করছেন ডুবুরি দলের সদস্যরা।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মো. সোহেল কবির জানান, সন্ধ্যায় এফআইডিসি এলাকার ৫জন একটি ছোট জালের নৌকা নিয়ে গুলশাখালী আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যায়। বেড়ানো শেষে বাড়ি ফেরার পথে হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকা ডুবে যায়। নৌকায় একজন পুরুষ, দুজন নারী ও দুজন শিশু ছিল। খবর পেয়ে আমরা রাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এক মহিলাকে উদ্ধার করি ও রানা নামে এক শিশুকে কচুরিপানার ভেতর মৃত অবস্থায় পাই। ওই নৌকায় থাকা শিরিনা বেগম ও তার ছেলে মাসুমকে (৫) কে রাতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে শিরিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে এখনো শিশু মাসুম নিখোঁজ রয়েছে।
লংগদু ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের ডুবরি দল রাঙামাটি থেকে সকালে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। নিখোঁজ নারী ও শিশুর মধ্যে শিরিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ চলছে।
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, গুলশাখালী এলাকায় নৌকা ডুবে এক শিশুসহ দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।