রাঙামাটি পৌর শহরের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের ভেদভেদি টু আসামবস্তি। আসামবস্তি টু স্বর্নটিলা টু তবলছড়ি বাজার সড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়ক খানা খন্দে ভরে গেছে।
এ খানা খন্দ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পথচারীদের বেড়েছে দুর্ভোগ। বর্ষাকাল আসলে এ দুর্ভোগ আরো দ্বিগুন হবে বলছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ভেদভেদি বাজার সংলগ্ন এলাকা ১৫ ফুটের অধিক রাস্তার পুরো কার্পেটিং উঠে গেছে প্রায় এক বছর আগে। সড়কের গর্তে জমে থাকে পানি। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ার সাথে সাথে কাদাযুক্ত পানি ছিটকে পড়ে পথচারীদের উপর। এ চিত্র নিত্যদিনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ সড়কটি দেখাশুনা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ভেদভেদী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল কুদ্দুস (৪৫) বলেন এ অবস্থা প্রায় এক বছর আগে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে।কিছুদিন পর পর এলজিইডির গাড়িতে করে কংকর এনে ভাঙা স্থানে ফেলা হয়। কয়েকদিন পর কংকর উঠে গিয়ে আবার আগের মত হয়ে যায়।
একই চিত্র সংঘরাম বিহার সংলঘ্ন বাজার এলাকায়। ৩০ ফুটের অধিক স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এখানেও একইভাবে কংকর ফেলে অস্থায়ী কাজ করে চলে যায় এলজিইডি।
সংঘরাম বাজারের দোকানদার স্বপন চাকমা (৩৫) বলেন প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙা রাস্তার উপর চলতে গিয়ে রং সাইড হলেও সবাই ভাল অংশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিতে চায়। এটি করতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে মোটর সাইকেল চালকরা দুর্ঘটনার শিকার হয়। এছাড়া গর্তে পানি জমে থাকার কারণে পথচারীদের গায়ে কাদাপানি ছিটকে পড়ে।
একই চিত্র আসামবস্তি বাজারের ত্রিমৌহনী মোড়ে। এখানে ৪০ ফুটের অধিক এলাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়া আসামবস্তি তবলছড়ি সড়কের ঝগড়াবিল হেডম্যান বাড়ি সংলগ্ন প্রায় ৫শ ফুট অধিক এলাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে শত শত গর্ত তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে স্বর্নটিলা এলাকায় সাবেক মেয়র ভুট্টো বাড়ি সংলগ্ন এলজিইডি রাস্তা কেটে নির্মাণ করা সেতুর কাজ গত ৩ মাস আগে শেষ করলেও সেতুতে উঠার জন্য এপ্রোচ রোড ঠিক করে দেয়া হয়নি। ফলে কাদা সড়ক পার হয়ে সেতু পার হচ্ছে যানবাহনগুলো।
অন্যদিকে সেতুর কাজ চলাকালীন বিকল্প রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয় স্বর্নটিলা পৌর সড়কটি। এ সড়কের অর্ধেকের বেশী এলাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে কাচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। একই চিত্র রাঙামাটি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কোতয়ালী থানা সংলঘ্ন এলাকায়।
রাঙামাটি সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, আসামবস্তি টু তবলছড়ি এলজিইডির সড়কটি যান চলাচলে অনুপযোগী হয়েছে। এ সড়কে সিএনজি চালাতে গিয়ে সিএনজি নষ্ট হচ্ছে। যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশী কষ্ট পাচ্ছে গর্ভবতী মহিলা ও মেরুদন্ডে সমস্যায় ভুগা রোগীরা।
এছাড়া স্বর্নটিলা টু গার্ল স্কুল পর্যন্ত পৌরসভার সড়কটি একেবারে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়েছে। এটি সংস্কারের অনুরোধ জানাতে আমাদের কমিটির সদস্যরা মেয়রের সাথে দেখা করেছি। মেয়র সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনো কাজ শুরু করা হয়নি।
রাঙামাটি পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাচিং মারমা বলেন, আসামবস্তি, স্বর্নটিলা এলাকায় সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা দেখতে পাচ্ছি।গাড়ি গর্তে পড়ে বিকল হচ্ছে। এক কথায় দুর্ভোগ বেড়েছে। ঈদের বন্ধের কারণে আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে পারিনি। শিগগির আমি এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে দেখা করে জনদুর্ভোগ কমাতে অনুরোধ করব।
এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, সড়কটির বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে গেছে এটা ঠিক। এটি সংস্কারের জন্য আমরা আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখেছি। রাস্তাটির তবলছড়ি থেকে ভেদভেদী পর্যন্ত ঠিক করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। যে বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে অর্ধেক রাস্তা সংস্কার করা যাবে। আমরা শিগগির কাজ শুরু করব। আগে তবলছড়ি দিক থেকে আসামবস্তির কাজ করা হবে।
রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, স্বর্ণটিলা টু গার্ল স্কুল পর্যন্ত সড়কটি পৌরসভার। এটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ বছর সড়কে কাজ হয়ত করা হবে না। আগামী বছর এটির কাজ হবে।