কাপ্তাই উপজেলা হতে ঘাঘড়া সড়ক দিয়ে গেলেই চোখে পড়বে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত বিলেতি ধনেপাতা সারি সারি করে সাজানো হচ্ছে। এই ধনেপাতা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করছেন চাষীরা। স্থানীয় বাজারসহ, শহরাঞ্চলে এই ধনেপাতার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভাল দামও পাচ্ছেন চাষিরা। ধনেপাতা চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কাপ্তাইয়ের পাহাড়ী এলাকার প্রান্তিক চাষিরা।
কাপ্তাই কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মধুসূদন দে জানান , চলতি বছর কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ী ও সমতল এলাকায় এই বিলেতী ধনেপাতার ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া অল্প পুঁজি, বেশি লাভ হওয়ায় ধনেপাতা চাষ করতে আগ্রহী পাহাড়ী চাষীরা। এ পাতার গন্ধ কড়া, পাতার দু’পাশে থাকে খাঁজকাটা। একবার বীজ বুনলে কয়েক বছর গাছ পর্যন্ত বেঁচে থাকে। ফলে বারবার পাতা সংগ্রহ করা যায়। যার কারণে এটি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন এই অঞ্চলের অনেক চাষিরা।
ধনেপাতা চাষ করা কাপ্তাই ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মিনিপ্রু মারমা, অংমে মারমা, সায়মং মারমা সহ কয়েকজন চাষী জানান, তারা পাহাড়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি সম্প্রতি ধনেপাতা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। বর্তমানে তারা পাইকারীভাবে প্রতিকেজি ধনেপাতা ৫০-৬০ ধরে বিক্রি করছেন। এবং এই ধনেপাতা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে পাঠানো হচ্ছে। ধনেপাতা সহজ পদ্ধতিতে চাষ করা সম্ভব বলে অনেক নতুন চাষীরা এটি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে তারা জানান। এছাড়া পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন বাগানের নিচে এবং আনাচে-কানাচে এ পাতা চাষ করছেন চাষিরা। ফলনও হচ্ছে বাম্পার। ফলে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা অর্জন করছে অনেক পরিবার।
কাপ্তাই কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেহ জানান, তাঁর ব্লকের আওতাধীন ওয়াগ্গা এলাকায় প্রায় ৫০ একর এলাকা জুড়ে এই বিলেতী ধনেপাতার চাষ হয়েছে। এবং প্রতিটি এলাকায় এই ধনেপাতার খুব ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া এই ধনেপাতা সম্পুর্ণ বিষমুক্ত ও রাসায়নিক সার বিহীনভাবে উৎপাদন করায় একদিকে যেমন এর চাহিদা বেশী, অপরদিকে কাপ্তাইয়ে উৎপাদিত এই ধনেপাতা স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। এতে অনেক স্বাবলম্বী হচ্ছেন ধনেপাতা চাষীরা। অপরদিকে ধনেপাতা চাষ করার পাশাপাশি বিভিন্ন শাক-সবজি একসাথে চাষ করার সুযোগ থাকে বলে, চাষীরা অনেক লাভবান হয় বলে তিনি জানান।