বিশ্ব মা দিবস আজ। সারা বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারটিকে ‘মা দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। এর সূত্রপাত ১৯০৮ সালের ৮ মে। এদিন প্রথম মা দিবস উদযাপন করেছিলেন আন্না জার্ভিস নামে এক ব্যক্তি। এরপর ১০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোবারকে মা দিবস হিসাবে ঘোষণা করেন।
আজ মাকে ভালোবাসার দিন। মাকে ভালোবাসি বলার দিন। মায়ের বুকে জড়িয়ে ভালোবাসার তৃপ্তি নেওয়ার দিন। মাকে শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় স্মরণ করার দিন। আজকের এ পবিত্র দিনে আমার স্বর্গীয়া মাসহ পৃথিবীর সব মায়ের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসা। সফল ও স্বার্থক হোক বিশ্ব মা দিবস।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মায়ের স্মৃতিচারণমূলক একান্ত আলাপে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী বলেছেন, তিনি পরপর দু’বার রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এতে রাজনৈতিকভাবে নিজেকে সফলও ভাবেন। ছাত্রজীবন থেকে জড়িয়ে পড়েন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এ পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন জেলা যুবলীগের নির্বাচিত সভাপতি হিসাবে। আমার এ সাফল্য মায়ের দোয়া।
নিজের স্মৃতিচারণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মেয়র আকবর বলেন, শৈশব থেকে পড়ালেখা, ছাত্রজীবন, রাজনীতিসহ কর্মময় জীবনে আমার এতটুকু এগিয়ে আসার সাফল্যের সবকিছুর পেছনে ‘মায়ের দোয়া, ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা, সাহস ও উৎসাহ-প্রেরণা’। আমাার মতে, সন্তান যতই বড় হোক- সে মায়ের কাছে ছোট্ট একটি সন্তানই। তাছাড়া পরিবারে সন্তানের প্রতি মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাই বিশ্ব মা দিবসে নিজের প্রিয় পত্রিকা পাহাড়ের খবর এর মাধ্যমে সন্তানেরা বেঁচে থাকা অবস্থায় যাতে বৃদ্ধ বয়সে কোনো মা, বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়- সেজন্য সবার কাছে মা, বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সেবাযত্নে কর্তব্য পালনের অনুরোধ থাকল।
পৃথিবীর সব মায়েদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মান জানিয়ে রাঙামাটির মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, মহান আল্লাহতালার অশেষ কৃপায় আমার মা রহিমা খাতুন (৮০) এখনো বেঁচে আছেন। তাই আজ পর্যন্ত রাজনীতিসহ আমার করণীয় সব বিষয়ে মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করি। মায়ের শাসন, বারণ, অনুশাসন মেনে চলি। বিপরীতে মা আমার করণীয় কাজে উৎসাহ-প্রেরণা ও সাহস জোগান এবং দোয়া করেন। আমি এ পর্যায়ে দুইবার রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। রাজনৈতিকভাবেও সফল হয়েছি। আমার অনুভূতি থেকে বলব, এসবের সবকিছুর পেছনে মায়ের দোয়া ও অবদান। কারণ, আমার এসব উদ্যোগে আমাকে মা সব সময় পাশে ছিলেন, সাহস যুগিয়েছেন, উৎসাহ-প্রেরণা দিয়েছেন।
আকবর বলেন, আমরা তিন ভাই ও তিন বোন। আমাদের মা একজন গৃহিনী। শৈশবকাল থেকে দেখে আসছি, পড়ালেখা থেকে শুরু করে সবকিছুর ক্ষেত্রে আমদের প্রতি মায়ের নজর সবচেয়ে বেশি। মায়ের অকৃত্রিম স্নেহ-ভালোবাসা ও আদর যতেœ আমরা ভাইবোন সবাই মানুষ হতে পেরেছি। আমাদের বাবা সুলতান আহমেদ ছিলেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি বেঁচে থাকাকালেও পেশাগত কারণে সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকায় সন্তানদের (আমাদের) দেখভাল করাসহ পরিবারের সব কর্তব্য পালন করতে হয়েছিল মাকে। ১৯৯৮ সালে বাবার মৃত্যুর পর থেকে পরিবারের মূল দায়িত্ব নিতে হয়েছে তাকে। আমরা তো কেবল সাহায্যই করে আসছি। কিন্তু মা আমাদের পড়ালেখা, ভবিষ্যৎ, আপদ-বিপদসহ সবক্ষেত্রে দেখাশোনা করে আসছেন। আমি মনে করি, মায়ের ঋণ কখনো শোধ করা যাবে না। আর একমাত্র মায়েরাই বেশি পারেন সন্তানদের স্বপ্ন পূরণ করতে। তাই আমি সব বিষয়ে মায়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়ে থাকি। মায়ের সহায়তায় আমার এতটুকু সাফল্য। এতে মা খুবই আত্মতৃপ্তি অনুভব করেন বলে আমি জানি। বাবা যদি আমার এতটুকু সাফল্য দেখে যেতে পারতেন, তিনিও অত্যন্ত আত্মতৃপ্ত বোধ করতেন।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরে মেয়র আকবর আরও বলেন, আমার দুঃখ হয়, যখন ছেলেমেয়েরা ভালো অবস্থানে থেকেও কোনো কোনো মা, বাবাকে অযত্ন অবহেলায় বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে পড়ে থাকতে দেখি বা শুনি। আমি মনে করি মা, বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা, সেবাযত্ন করা সব সন্তানের একান্তই করণীয় কর্তব্য। তাই সবার প্রতি অনুরোধ- মা, বাবাকে অবহেলা নয়, শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা ও সেবাযত্নে আত্মনিবেদিত হই। আমি বিশ্ব মা দিবস ২০২৩ স্বার্থক ও সাফল্য কামনা করি।