পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে রাঙামাটিতে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের মোটেল জজ এর হল রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ও কেক কাটা হয়।
আলোচনা সভা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ও কলেজ শাখার আহ্বায়ক মো: শহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে ও জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: সোলায়মান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি’র রাঙ্গামাটি পৌর কমিটির সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন, আরো বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি’র সদর থানার শাখার আহবায়ক সজীব ফিরোজ, রাঙামাটি পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমূখ।
আলোচনা সবার শুরুতেই পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি হিসেবে শাহাদাত হোসেন কায়েশ ও সাধারণ সম্পাদক মো: হাবীব আজমকে নির্বাচিত করায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি’র) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান ও মহাসচিব আলমগীর কবিরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান রাঙামাটি জেলা, কলেজ ও পৌর শাখার নেতৃবৃন্দরা।
আলোচনা সভায় বক্তরা বলেন, পার্বত্য অঞ্চল অনগ্রসর অঞ্চল, পার্বত্য এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, চাকরি, উচ্চশিক্ষা বৃত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্যে নানা রকম কোটা ও সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে সরকার। তবে একই এলাকায় বসবাস করে এবং জনগোষ্ঠীর অর্ধেক হয়েও তা পাচ্ছেন না বাঙালিরা।
শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। অবিলম্বে সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যানুপাতে সকল সুযোগ-সুবিধা বণ্টন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে একজন বাঙালি প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান।
মেডিকেল, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সকল উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে উপজাতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ১৯৮৪ সাল থেকে। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর কোটার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতি বছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩২৫ জন উপজাতি ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে কোটাতেই। নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এর সংখ্যা আরো বাড়ানো হয়েছে।
অন্য দিকে একই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বাঙালীদের জন্য কোটা তো দূরে থাক তেমন কোনো সুযোগ এখনো তৈরি করা হয়নি। পিছিয়ে পড়া অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী দু’টি জনগোষ্ঠীর জন্য দুই রকম নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ শিক্ষাবৃত্তিতে বাঙালিরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, তাই আগামীতে উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ কর্তৃক শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে বাঙালি শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে দিতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপান করে নেতাকর্মীরা।