শুক্রবার , ২৮ মার্চ ২০২৫ | ১৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজিরবিহীন বৈষম্যের প্রতিবাদ পিসিসিপির

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
মার্চ ২৮, ২০২৫ ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতি এক নজিরবিহীন বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে চাকমা মার্কা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে সমান ভাবে বরাদ্দের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ২৮ শে মার্চ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি।

পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জমির উদ্দিনের স্বাক্ষরিত প্রেস বিবৃতিতে বলা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাহাড়ের জনগণের সাথে বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা সংবিধানের সাম্যের নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সাম্প্রতিক বাজেট বরাদ্দ তালিকা পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়, এই বরাদ্দ প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, পক্ষপাতদুষ্ট এবং এক বিশেষ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীভূত। রাষ্ট্রের সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য নয়, এটি সকল নাগরিকের সমান অধিকার। অথচ সরকার পাহাড়ি অঞ্চলের জনসংখ্যার প্রকৃত চিত্র ও প্রয়োজন উপেক্ষা করে একপাক্ষিক বরাদ্দ প্রদান করেছে, যা চরম বৈষম্যমূলক।

পিসিসিপি’র বিবৃতিতে আরো বলা হয় আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার মধ্যে বরাদ্দের যে বিভাজন করা হয়েছে, তা চরম অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

খাগড়াছড়ি: ১৯৫ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা (৭১.০২%)
রাঙামাটি: ৪৪ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা (২৭.৭৭%)
বান্দরবান: মাত্র ৩ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা (১.২০%)

এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে যে, বান্দরবানকে পরিকল্পিতভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার মধ্যে বান্দরবান একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। কিন্তু সেখানে বরাদ্দ মাত্র ১.২০%! এটি সরাসরি বৈষম্যের পরিচায়ক।

বিবৃতিতে জাতিগত বৈষম্য স্পষ্ট উল্লেখ করে বলা হয়
রাঙামাটির বরাদ্দ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—
চাকমা সম্প্রদায় পেয়েছে ৮৬.৫০% বরাদ্দ
বাঙালিরা পেয়েছে মাত্র ৬.৯৫%
মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বরাদ্দ আরও নগণ্য।
খাগড়াছড়ির বরাদ্দের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, চাকমারা পেয়েছে ৭৩.০৯%, যেখানে বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতালদের বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে খুবই কম।

এই বরাদ্দে অনিয়মের আরেকটি প্রমাণ হলো একই ব্যক্তি একাধিকবার অনুদান পেয়েছে। যেমন: রাঙামাটির রনজ্যোতি চাকমা দু’বার (৩+৩) মোট ৬ লাখ টাকা পেয়েছে।
বিনৌটি চাকমা ১২টি গ্রুপের নামে ২৫ লাখ টাকা পেয়েছে। খাগড়াছড়ির ত্রিনা চাকমা ১২টি গ্রুপের নামে ২৫ লাখ টাকা পেয়েছেন।

অন্যদিকে, বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর অনেকেই কোনো বরাদ্দ পাননি! এই ধরনের পক্ষপাতমূলক বরাদ্দ সরাসরি সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্র সমাজের সব নাগরিকের মধ্যে সমতা বিধান করবে।”

বিবৃতিতে পিসিসিপি জোর দাবি জানান
১. এই বৈষম্যমূলক সাম্প্রদায়িক চাকমা বরাদ্দ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. বান্দরবানসহ সকল জেলার জন্য ন্যায্য বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতালসহ সকল জনগোষ্ঠীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. একই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে একাধিকবার বরাদ্দ দেওয়ার অনৈতিক প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
৫. জনসংখ্যার অনুপাতে ও প্রকৃত প্রয়োজনের ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।

বিবৃতিতে পিসিসিপি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে উল্লেখ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, এটি সকল জাতিগোষ্ঠীর আবাসভূমি। এখানে বরাদ্দের নামে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। এই বৈষম্যমূলক বাজেট অবিলম্বে সংশোধন করা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। ইতিহাস সাক্ষী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ কখনও নীরব ছিল না, এখনো থাকবে না।

বিবৃতিতে পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটি বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই-ন্যায়বিচার ও সাম্যের দাবিতে পাহাড়ের জনগণ রাস্তায় নামতে প্রস্তুত! এই বরাদ্দের মাধ্যমে পার্বত্য মন্ত্রণালয় প্রমাণ করল পাহাড়ে চাকমা আধিপত্যবাদ বিদ্যমান রয়েছে, যার পদতলে পিষ্ট হচ্ছে চাকমা ব্যতীত পাহাড়ের অন্য ১২টি নৃ-গোষ্ঠী।

এই চাকমা মার্কা বরাদ্দ বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে সমান ভাবে বরাদ্দের আওতায় আনতে হবে অন্যথায় পার্বত্য উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত
%d bloggers like this: