খাগড়াছড়ির রামগড়ে উপজেলা প্রশাসন গরু মাংসের কেজি ৭শ টাকা নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীরা মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (১ লা মার্চ) সোনাইপুল বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন কোন গরু জবাই করেনি তারা। এরআগে গত বুধবার রামগড় বাজারেও গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রাখে ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং কমিটির এক সভায় গরু মাংসের কেজি ৭শ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরআগে রামগড়ে হাটবাজারে ৮শ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হচ্ছিল। কিছুদিন ৭৫০ টাকায়ও বিক্রি হয়।
আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় মাত্রায় রাখার প্রস্তুতি হিসেবে গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন এর সভাপতিত্বে বাজার মনিটিরিং কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজার পরিচালনা কমিটির নেতৃবন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা চাওয়া হয়।
সভায় ভোক্তা সাধারণের দাবির প্রেক্ষিতে গরুর মাংসের কেজি ৭শ টাকা নির্ধারণ করা হয় । এতে মাংস ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানালেও তা প্রত্যাখান করা হয়। সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভায় ঘোষণা দেন, ৭শ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, দাম ৭শ টাকা নির্ধারণ করায় গত বুধবার রামগড় বাজারে ও আজ শুক্রবার সোনাইপুল বাজারে গরু জবাই ও মাংস বিক্রি করেনি ব্যবসায়ীরা।
শাহ আলম নামে এক মাংস বিক্রেতা বলেন, এখানে বোল্ডার সাদা গরু তেমন চলেনা। দেশি গরুর দামও অনেক বেশি। তাই তারা ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু ৭শ টাকায় বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুণতে হবে।
বেশ কয়েকজন স্থানীয় ভোক্তা অভিযোগ করে বলেন, সিন্ডিকেট করে মাংস ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছেন। একদিকে অধিক দাম, আবার নিজের পছন্দের কোন মাংসই দেওয়া হয়না ক্রেতাদের। অতিরিক্ত হাঁড় ও খাওয়ার অযোগ্য উচ্ছিষ্ট অংশ মেপে দেওয়া হয় ক্রেতাদের। ৭শ টাকা কেজি দর নির্ধারণ করে দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান ভোক্তারা।
রামগড় বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সালাহ উদ্দিন সুমন গরুর মাংসের দাম ৭শ টাকা নির্ধারণ করাকে ন্যায় সংগত উল্লেখ করে বলেছেন, এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসনের পাশে থাকবে বাজার কমিটিও। ব্যবসায়ীরা মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, বাজারের ওই ছয়জন ব্যবসায়ী ছাড়াও অনেকে আছেন ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করার। বাজার কমিটি তাদের উৎসাহ ও সমর্থন দেবে।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন বলেন, মাংস বিক্রেতা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে ভোক্তাদের। সামনে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় রাখতে সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। খাগড়াছড়িসহ আশেপাশে সর্বত্র গরু মাংস বিক্রি হয় ৬৫০-৭০০ টাকা কেজিতে। রামগড়ে ৮শ টাকা কেন হবে? ভোক্তাসহ সার্বিক দিন বিবেচনা করে ৭শ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ দামে তারা বিক্রি করতে না পারলে না করবে, তবে ৭শ টাকার বেশি করলেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।