শনিবার, মার্চ ২৫News That Matters

রাঙামাটি পৌর বর্জ্যর শেষ গন্তব্য  কাপ্তাই হ্রদ

শেয়ার করুন:

 

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি

রাঙামাটি পৌর শহরের বর্জ্যগুলোর শেষ গন্তব্য হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে।শহরের প্রতিদিনের বর্জ্যর ফেলা হচ্ছে রাঙামাটি শহরের প্রবেশ মুখ মানিকছড়ি বেতার কেন্দ্র এলাকায়। এ বর্জ্যর গন্ধ শুকেই রাঙামাটি প্রবেশ করতে হচ্ছে মানুষকে।  বর্জ্যর কারণে কাপ্তাই হ্রদ দুষিত হচ্ছে, অন্যদিকে ভরাট করছে হ্রদের তলদেশ। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে মানুষজন।

রাঙামাটি পৌরসভার তথ্যমতে শহর থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। এগুলো মানিকছড়ি বেতার কেন্দ্র এলাকায় ফেলা হয়। এ বর্জ্য উলুছড়ি, ভেদভেদি সেনানিবাস এলাকা হয়ে পড়ছে কাপ্তাই হ্রদে।

২০১৭ সালে পাহাড় ধস হলে বর্জ্য চলে যাবার পথ বড় হয়ে যাওয়ায় হ্রদে বর্জ্য পড়ছে সরাসরি।  বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায়  দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন ডাম্পিং পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দারা।

বেতার কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন (৪০) বলেন পুরো রাঙামাটি পৌর শহরের বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। এ বর্জ্য বর্ষার বৃষ্টি হলে পানিতে ভেসে হ্রদে চলে যাচ্ছে। এখানে বর্জ্য ফেলার কারণে আশপাশ এলাকায় দুর্গন্ধে থাকা যায় না। কাকসহ বিভিন্ন পশুপাখিরা আবর্জনা স্তুপ থেকে ময়লা নিয়ে বাসা বাড়ির আঙিনায় ফেলছে। খুব কষ্ট হচ্ছে।

 

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কাপ্তাই হ্রদের পানি উত্তোলন তরে তা পুরো পৌরসভায় সরবরাহ করে।   হ্রদের  কিছু কিছু এলাকায় দুষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলছেন স্থানীয়রা।

রাঙামাটি  জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অনুপম দেব বলেন,

আমরা পানি জীবানুমুক্ত করে সরবরাহ করছি। তবে এ পানি যাতে সরাসরি পান করা না হয় সেজন্য পৌরবাসীকে বলা আছে।

রাঙামাটি জেলা সচেতন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন,

রাঙামাটি পৌর শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে হচ্ছে না। যে স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে এ ময়লা চলে যাচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে। প্রধান সড়কে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যেন রাঙামাটি শহরে প্রবেশ করতে মানুষজনকে ময়লা গন্ধ শুকে শহরে প্রবেশ করতে হয়। এটি রাঙামাটিবাসীর জন্য লজ্জার ব্যাপার।

চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায় বলেন,

ছোটবেলায় এ পানি খেতাম আমরা এখন অসম্ভব, পানি লাগলে চর্মরোগ হচ্ছে। রাঙামাটি পৌরসভার বর্জ্যগুলো যেন পরিবেশ দুষিত না করে সেজন্য পৌরসভাকে আরেকটু দায়িত্বশীল হতে হবে।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে হ্রদের পানিতে দুষণের মাত্রাবেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন

রাঙামাটি শহরের মানুষ কাপ্তাই হ্রদের পানি ব্যবহার করে। কিন্তু পানি যে হারে দুষিত হচ্ছে তা জন   স্বাস্থ্যর জন্য হুমকি।

২০১৭ সাল থেকে হ্রদে বর্জ্য পড়ার হার বেড়েছে স্বীকার করে রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, পৌর শহরের ময়লাগুলো ফেলার জন্য বিকল্প কোন জায়গা না পাওয়ায় সেখানে ফেলতে হচ্ছে। তবে নতুন জায়গা খুজা হচ্ছে। নতুন জায়গা পাওয়া গেলে ডাম্পিং স্থান সেখানে স্থানান্তর করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *