রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা মৌজায় বসবাসরত তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের নারী পুরুষরা তাদের বিষু উৎসবের প্রথমদিন ( ফুল বিষুর দিন) কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলি স্টেডিয়াম সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে ফুল ভাসালো। এ সময় তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে শতাধিক নারী পুরুষ এই ফুল ভাসানো উৎসবে অংশ নেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৮ টায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো রুহুল আমিন। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ মুহুরী, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ এর সাবেক চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, ১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান এবং বিষু উদযাপন কমিটির আহবায়ক অরুণ তালুকদার, কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ এর উপাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ তনচংগ্যা কল্যান সংস্থা কাপ্তাই অঞ্চল কমিটির সভাপতি অজিত কুমার তনচংগ্যা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমল বিকাশ তনচংগ্যা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব লাকি তনচংগ্যা, বিষু উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব তাপস তনচংগ্যা, রূপসী কাপ্তাইয়ের সম্পাদক সাংবাদিক কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্ত অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিষু উৎসবের তিন দিনের মধ্যে ফুল বিষু প্রথমদিন। ফুল বিষু শুরু হয় বসন্তের শেষ দিকে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ অর্থাৎ বছর শেষ হওয়ার একদিন আগে। এইদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে আনন্দের সহিত হরেক রকমের ফুল তোলা হয়। উল্লেখ্য, ওই সময় বাড়ির আঙ্গিনায় ফোঁটা ফুল সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
ফুল ভাসানো উৎসবে অংশ নিতে আসা লাকি তনচংগ্যা, রত্না প্রভা চাকমা এবং গোপা তনচংগ্যা বলেন, সেই ভোর ৪ টায় উঠে স্নান কর্ম সেরে ফুল তুলে আজকে আমরা কর্ণফুলি নদীতে ফুল ভাসাতে আসলাম। আগামী বছর যাতে আমাদের ভালো কাটে সেই জন্য আমরা এই প্রার্থনা করছি।
বাংলাদেশ তনচংগ্যা কল্যান সংস্থা কাপ্তাই অঞ্চল কমিটির সভাপতি অজিত কুমার তনচংগ্যা বলেন, আজকের এই দিনে তনচংগ্যা কল্যান সংস্থার পক্ষ হতে বাংলাদেশের সকল জনগণকে শুভেচ্ছা জানাই। আমরা সকলে যাতে সুস্থ ভাবে থাকতে পারি সেইজন্য সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা জানাই।
১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান এবং বিষু উদযাপন কমিটির আহবায়ক অরুণ তালুকদার ও সদস্য সচিব তাপস তনচংগ্যা বলেন, এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্য, সম্প্রীতি তুলে ধরার চেষ্টা করি। আজকে আমাদের এই উৎসবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজনও অংশ নিয়েছেন। এই ফুল ভাসানো উৎসব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।