রাঙামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক জয় ত্রিপুরা হত্যার প্রতিবাদ, খুনীদের গ্রেফতারসহ শাস্তির দাবীতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জেলা- উপজেলা-পৌর ছাত্রলীগ।
শুক্রবার সকালে রাঙামাটি শহরে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০ টায় রাঙামটি পৌরসভা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ে একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এ শক্তি চায় না পাহাড়িরা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করুক। জয় ত্রিপুরা অসাম্প্রদায়িক ছাত্রলীগ রাজনীতি করে এ অপরাধে তাকে খুন করা হয়েছে। রাঙামাটি শহরের মত নিরাপদ শহরে এমন হত্যাকান্ড মানা যায় না। কিন্তু ঘটনার একদিন পার হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার অসন্তোষ প্রকাশ করেন বক্তারা।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন,
বুধবার রাতে যখন জয় ত্রিপুরাকে খুন করা হয় তখন আশপাশে সকল সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। এটি কোন পরিকল্পিত হত্যাকান্ড কিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তা খতিয়ে দেখার দাবী জানান।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জয় ত্রিপুরা খুনের সাথে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না হলে তাহেল অবরোধ হরতাল দিয়ে রাঙামাটিকে অচল করে দেওয়া হবে” ঘোষণা দেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জয় ত্রিপুরার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। না হলে রাঙামাটি অচল করে দেওয়া হবে।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী, রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান রোমান, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, জয় ত্রিপুরার মামা ঝিনুক ত্রিপুরা, রাঙামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন।
সমাবেশ চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাস্তায় বসে পড়ায় রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কে প্রায় আধাঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।
এদিকে এ ঘটনার একদিন পার হলেও পুলিশ কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে জয় ত্রিপুরার লাশ দাহ করা হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। নিহত জয় ত্রিপুরার ভাই সাগর ত্রিপুরা কোতায়ালী থানায় অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের নামে মামলা করেছেন। এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। পুলিশ মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে।
প্রসঙ্গত গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালে থেকে রোগী দেখা শেষে নিজ বাড়ি দেবাশীষ নগরে ফিরছিলেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক জয় ত্রিপুরা। ফিরার পথে পোস্ট অফিস সংলগ্ন হাসপাতাল গেটের সামনে দুর্বত্তরা জয়কে ছুরিকাঘাত করে। জয় পেটের বাম সাইডে জখম হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর জয়কে মৃত ঘোষণা করেন ডাক্তার।