পাহাড়ে ধর্ষণ কে সাম্প্রদায়িক ও রাজনীতির হাতিয়ার বানানোর প্রতিবাদে নৌ পথে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
অদ্য (২৪ অক্টোবর) শুক্রবার দুপুরে রাঙামাটি পৌর এলাকার কাপ্তাই হ্রদের শহীদ মিনার ঘাট থেকে শুভলং ঝর্ণা পর্যন্ত নৌযানে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করে। এসময়ে শুভলং ঝর্ণার সামনে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ এর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো: পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, পিসিএনপি রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, পিসিএনপি বরকল উপজেলার নেতা সোহরাব হোসেন, এমদাদুল ইসলাম, পিসিসিপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম বাবু, আরিয়ান রিয়াজ প্রমুখ।

এসময়ে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটির কাপ্তাইে তিন মারমা যুবক কর্তৃক এক প্রতীবন্ধী মারমা নারীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের কারনে আন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও ধর্ষকদের আইনি কোন বিচার হয়নি, গর্ভের সন্তানের দায়িত্ব কে নিবে তা নিয়ে পাহাড়ের অধিকার কর্মীদের কোন উচ্চবাচ্য নেই! এদিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার অযোদ্ধা কালি মন্দিরে আলো নিভে গেছে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের চিৎকারে। চারজন পাহাড়ি যুবক তাকে টেনে নিয়েছিল অন্ধকারে — চারজন এখন পুলিশের হাতে। গতকাল (২৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাত্রে খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র (তারেং) এলাকায় চাকমা সম্প্রদায়ের এক স্কুল শিক্ষিকাকে অ*স্ত্রের ভ*য় দেখিয়ে ধ*র্ষ*ণের অভিযোগ উঠেছে এক ত্রিপুরা যুবকের বিরুদ্ধে, সেও এখন পুলিশের হাতে। কিন্তু চারপাশে নীরবতা।
কিছুদিন আগেই যে পাহাড় “ধর্ষণের মিথ্যা ইস্যু” তে রাস্তায় আগুন ধরিয়েছিল, আজ সত্যিকারের ধর্ষণের খবরেও তাদের মুখে তালা। যে কণ্ঠ একদিন “ন্যায়বিচার চাই” বলে চিৎকার করেছিল, আজ সেই কণ্ঠগুলো কোথাও শুনতে পাওয়া যাচ্ছেনা, কেন? এইবার মেয়েটির কান্না জাতিগত রাজনীতির কাজে লাগানো যাচ্ছে না তাই?
নাকি আমরা এতটাই অভ্যস্ত ভণ্ড ন্যায়বিচারে, যেখানে প্রতিবাদের আগে দেখা হয় — অপরাধীর জাতি, ধর্ম আর দলে সে কার? ধর্ষণকে পাহাড়ে এখন জাতিগত ঘটনার রুপ দেয়া হচ্ছে কি? যেখানে অন্যের যন্ত্রণাও আমরা নিজের স্বার্থে মেপে দেখি। স্বার্থ হাসিল করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করা গেলেই শুধু প্রতিবাদের ঝড় উঠবে আর তা না হলে আসল ভিক্টীমের কান্নাও দেখা হয় না! এ কেমন ধর্ষণের ইস্যুতে সাম্প্রদায়িকতা ও রাজনৈতিক হাতিয়ার?
বক্তারা আরো বলেন, এই ধর্ষণের ইস্যুকে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে খাগড়াছড়িতে ব্যাপক সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলো পাহাড়ি সংগঠন গুলো, তাদের সংহিতা’য় তিন জনের প্রাণ নিভে যায়, অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়ে যায়, সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের উপর হামলা করা হয়। তাহলে ধর্ষণের ইস্যুতে প্রতিবাদ করা হয় কি পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতা ছড়ানোর জন্য?
বক্তারা বলেন, এসব সহিংসতা ছড়ানোর পিছনে কলকাঠি যে নাড়ে সেই ব্যক্তি হলো পাহাড়কে অস্থিতিশীল করার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামি খল নায়ক মাইকেল চাকমাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করতে হবে।


















