দেশের ক্রীড়াঙ্গণে এখন খাগড়াছড়ির নারী ফুটবলারদের জয়-জয়কার। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও নৈপূণ্যের দ্যুতি ছড়াচ্ছে আনাই-আনুচিং-মনিকারা। সম্ভাবনার স্বপ্ন জাগাচ্ছে সেনারি চাকমাও। এই চার কৃতী ফুটবলারের সাথে গত ছয় মাসে দারুণ হৃদ্যতা জমে উঠেছে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস’র।
তারই ধারাবাহিকতায় গেলো ঈদের সরকারি ছুটিতে তিনি ডেকে পাঠান দেশের আলোচিত চার কৃতী ফুটবল কন্যা জেলা সদরের যমজ দুই সহোদরা আনুচিং মগিনী ও আনাই মগিনীকে। সাথে সেই দুর্গম লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার মনিকা চাকমা এবং অতি সম্প্রতি পর্তুগালে উচ্চতর ফুটবল প্রশিক্ষণে সুযোগ অর্জনকারী সেনারী চাকমাকেও।
তিনি তাদের জন্য নিজের সরকারি বাংলোতে মনোমুগ্ধকর আতিথেয়তার আয়োজন করেন। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের সহধর্মিনী দীপান্বিতা বিশ্বাস এবং তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে বেড়ান।
শুধু তাই নয়, এই চার কীর্তিময়ীর সাথে প্রাণচঞ্চল চারটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
কৃতী খেলোয়ারদের সাথে এমন ব্যতিক্রমী ভ্রমণের ছবি ও বৃত্তান্ত দেখে জেলা প্রশাসকের ফেইসবুক ওয়ালে দারুণ সাড়া লক্ষ্য করা গেছে।
খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন’র সাধারণ সম্পাদক সৈকত দেওয়ান জানান, এই চার কৃতী ফুটবলারের পরিবারই সার্বিক দিক দিয়ে পিছিয়ে। জেলা প্রশাসক তাঁর অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে উঠতি মেধাবী মুখগুলোর ভাষা বুঝতে পেরেছেন। সরেজমিনে মাইলের পর মাইল পেরিয়ে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছেছেন।
খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থা’র সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা জানান, জেলা প্রশাসক চার ফুটবল কন্যার পরিবারের যোগাযোগ-আবাসন-বিদ্যুৎ-পানীয়-আর্থিক থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্যা সমাধানে দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর এই উদ্যোগ এবং দৃশ্যমান পৃষ্টপোষকতার ফলে জেলার ক্রীড়াঙ্গণে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে।
এদিকে চার কৃতী ফুটবলারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি প্রেরণা আর সম্মানের বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ বিষয়ে শুধু বলতে চেয়েছেন, এসব মেধাবী মানুষগুলোকে এগিয়ে যাবার উৎসাহ অব্যাহত থাকলে একদিন খাগড়াছড়ির ক্রীড়াঙ্গণ পথ দেখাবে দেশের অন্য জেলাকেও।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের একেবারে শেষদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় জেলা প্রশাসক হিশেবে যোগ দেয়া মাত্রই করোনার ধাক্কায় সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িও থমকে পড়ে।
স্থবির সেই সময়কালে তিনি জেলার ক্রীড়া-সংস্কৃতি-শিক্ষা এবং পর্যটন সম্ভবনা নিয়ে ভীষণ আগ্রহী হয়ে উঠেন। করোনা’র প্রকোপ কমতে শুরু করলে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস মানুষের সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলতে এবং সমস্যা সমাধানে তাঁর কর্মব্যস্ততা এবং একাগ্রতা এরিমধ্যে জেলাবাসীর নজর কেড়েছে।