পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২২ পালন করা হয়েছে।
রবিবার সকাল পৌনে নয় টায় জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব নিখিল কুমার চাকমা এর নেতৃত্বে রাঙামাটি সদর উপজেলায় ও বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পনসহ ১ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), বোর্ডের সার্বক্ষনিক সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব), সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), সদস্য পরিকল্পনা মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব)সহ বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সকাল পৌনে ১১ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্ণফুলী সম্মেলন কক্ষে ১৫ আগস্ট ২০২২ জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহ্ফিল’ এর আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) জনাব নিখিল কুমার চাকমা।
আলোচনা’র শুরুতে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও কর্মবিষয়ক স্বল্প দৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন থেকে তেলাওয়াতসহ পবিত্র ত্রিপিটক ও পবিত্র গীতা ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। বোর্ডের তথ্য অফিসার মিজ্ ডজী ত্রিপুরা অনুষ্ঠানের পর্ব উপস্থাপনা করেন।
চেয়ারম্যান বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারবর্গ যারা নিহত হয়েছেন সকল শাহাদত বরণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন যে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র নায়কের হত্যাকন্ড দেখেছি। কিন্তু নিষ্পাপ শিশু ও অন্তঃসত্ত¡া নারীসহ সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, এমন নজির নেই। নিকৃষ্টতম এ হত্যাকন্ড জাতির জন্য একটি কলঙ্ক অধ্যায়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার না করার জন্য “ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ” আইন প্রণয়ন করা হয়েছিলো। এতে প্রমাণিত হয় যে, আগামী দিনের অগ্রযাত্রাকে রোধ করার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধ চেতনাকে ধবংশ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নেক্কারজনক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিলো। আত্ম সীকৃতি খুনি ১২জনের মধ্যে ৬জনের ফাঁসি হয়েছে, ১জন বিদেশে মারা গেছে আর বাকি ৫জন এখনো পলাতক রয়েছে। বাকি খুঁনিদের দেশে ফিরে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে যারা মেনে নেয়নি, তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারবর্গকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো। এ হত্যাকান্ড একদিনের হয়নি, দীর্ঘদিনের সুপরিকল্পিত ঘটনা। কিন্তু এ হত্যাকান্ডের নৈপথ্যে নায়ক কে তা এখনো উদঘাটন করা হয়নি। তিনি এ হত্যাকান্ডের মূল হুতাকে খোঁজে বের করে জনসম্মুখে প্রকাশে বিচার করার দাবি জানান।
আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্তসচিব), সদস্য-প্রশাসন ইতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব), সদস্য-বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), সদস্য পরিকল্পনা মোঃ জসীম উদ্দিন, মোঃ এয়াছিনুল হক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, এসএসএস-সিএইচটি প্রকল্প; বেগম নিলুফার নাজনীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক, এসএসএস-সিএইচটি প্রকল্প; নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা (চ.দা.), উপপরিচালক মংছেনলাই রাখাইন, কল্যানময় চাকমা, হিসার রক্ষণ কর্মকর্তা; মনজু মানষ ত্রিপুরা, জেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক এসএসএস-সিএইচটি প্রকল্প; কাইংওয়াই ম্রো, গবেষণা কর্মকর্তা; সহকারী প্রকৌশলী মোঃ খোরশেদ আলম, ডজী ত্রিপুরা, তথ্য অফিসার; সাগর পাল, সহকারী পরিচালক (চ.দা.); বোর্ডের প্রকল্পসমূহের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং বৈশ্বিক সংকট পরিস্থিতি উত্তোরণের কামনায় বোর্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অংশগ্রহণে সকালে রাঙামাটির তবলছড়িস্থ আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া দুপুরে বোর্ডের জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহ্ফিল ও তবারক বিতরণ করা হয় এবং তবলছড়িস্থ শ্রী শ্রী রক্ষা কালি মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া স্ব স্ব জেলা পর্যায়ের কর্মসূচির সাথে সাম্যঞ্জস্য রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট অফিস সমূহের নিকটবর্তী মসজিদ, মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারে তাঁর পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহ্ফিল ও তবারক বিতরণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প পরিচালিত ৪টি আবাসিক বিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হয়।