কেউ ড্রাইভিং, কেউ সেলাই, কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইন, কেউ গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করার প্রত্যয়ে মিড লেভেল সুপারভাইজার, কেউ ইলেকিট্রশিয়ান এবং পেশাদার বিউটিশিয়ান হবার লক্ষে হাতে-কলমে তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে হাত পাকিয়েছেন; স্বনির্ভর-স্বাবলম্বী জীবন গড়ার মানসে।
মাধ্যমিক এবং কলেজ উত্তীর্ণ এমন স্তরের ১৭৫ জশ জন নারীকে কানাডিয়ান সরকারের অর্থায়নে প্রশিক্ষণ দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ।
সোমবার বিকেলে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় পরিচালিত ‘এসআইডি-ইউএনডিপিসিএইচটি’ প্রকল্পের মাধ্যমে সেসব প্রশিক্ষিত তরুণীদের হাতে সনদ এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট উপকরণ তুলে দেন, শরণার্থী টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদ-মর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট-খাগড়াছড়ি’র হলরুমে পার্বত্য জেলা পরিষদ-খাগড়াছড়ি’র চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী’র সভাপতিত্বে আয়োজিত সনদ ও উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য জেলা পরিষদ’র মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, জেলা পরিষদ সদস্য নিলোৎপল খীসা এবং এসআইডি-ইউএনডিপিসিএইচটি’র কর্মকর্তা উশিমং চৌধুরী।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পুরুষশাসিত সমাজে নারীর প্রতি যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা অবদমন; নারীর প্রতিভা বিকাশের পথকে রুদ্ধ করে রেখেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা ‘নারী উন্নয়ন নীতি’ করেছে। কিন্তু একটি মহল ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের জীবনভর গৃহবন্ধী করে রাখতে চাইছে। নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় সিভিল এবং মিলিটারি প্রশাসনে নারীর অগ্রাধিকার বাস্তবায়ন করেছেন। এই যুগের আধুনিকতম বাহন ‘মেট্রোরেল’র চালক হয়েছেন নারী।
তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণীদের আত্ম-বিশ্বাসের সাথে প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সাহসের সাথে পথ চলার আহ্বান জানান।
পাইয়ুমং চৌধুরী’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুস্মিতা খীসা, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শাহজাহান, টিটিসি’র ড্রাইভিং ইনস্ট্রাক্টর মনিমুকুর চাকমা এবং ‘আনন্দ ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ শ্যামল রোজারিও বক্তব্য রাখেন।
সভায় জেলা পরিষদ’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ, জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরী ও খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন’র সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধান অতিথি ছয়টি ট্রেডের প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অর্জনকারী স্বর্নাচাকমা, মিথিলিা মারমা, হামজাকতি ত্রিপুরা, আয়েশা খাতুন, পূর্ণিমা চাকমা এবং চিং মারমা’র হাতে সনদ এবং প্রশিক্ষণ সহায়ক উপকরণ ( সেলাই মেশিন- স্মার্ট ফোন-টুলবক্স-বিউটিবক্স) তুলে দেন।
উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সব তরুণীকেই এসব উপকরণ প্রদান করা হয়।