আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমাকে সামনে রেখে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহন করেছে যার নাম “১০ টাকার আনন্দ হাট”। যে হাটকে বলা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে কম মূল্যের বাজার যেখানে পণ্যসামগ্রীর মূল্য “মাত্র ১ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪ টাকা পর্যন্ত!। এই বাজারে ১ টাকা দিয়ে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার পণ্য কেনা যায়! যেমন ১ টাকা দিয়ে এক কেজি চাল যেমন পাওয়া যায় তেমনি ১ ডজন ডিমও পাওয়া যায়! আবার ১ টি টিশার্ট যেমন ১ টাকায় ক্রয় করা যায় তেমনি ৩ টাকা দিয়ে পাওয়া গেছে একটি নতুন শাড়ি কিংবা থামি!
প্রায় ৮০০ মানুষের জন্য অভিনব এই বাজার বসেছে আজ খাগড়াছড়ির ঐতিহাসিক য়ংড বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গনে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিহারের গুরু ভান্তে ক্ষেমাসারা মহাথের, বিহারের সভাপতি থোয়াইলা প্রু মারমা, প্রেসক্লাব সভাপতি জিতেন বড়ুয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী,উপজাতি শরণার্থী টাস্কফোরস এর নির্বাহী অফিসার রাশেদুল হক ও বিদ্যানন্দের বোর্ড সদস্য জামাল উদ্দিন।
য়ংড বৌদ্ধ বিহারের গুরু ভান্তে ক্ষেমাসারা মহাথের বলেন “সারা দেশে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন যে অসাধারণ সব কাজ করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। য়ংড বিহার কে এই কার্যক্রম পরিচালনায় বেছে নেয়ায় তিনি বিদ্যানন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বিদ্যানন্দ থেকে বলা হয়; বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মাঝে দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন বিপন্ন। আয় ব্যয়ের হিসাব মেলাতে অনেকের কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় কিছুটা ধার দেনা করে দোকান থেকে পণ্য না পেলে অভুক্ত থাকতে হয় তাদের। এজন্য গরীব ও দুঃস্থদের নামমাত্র মূল্যে পণ্য দিতে আমরা আয়োজন করেছি ‘আনন্দ হাট’।
সরেজমিনে দেখা যায়; প্রায় ২৬ রকমের পণ্য নিয়ে শহরের দামী সুপারশপের আদলে সাজানো হয়েছে “আনন্দ হাট”। পণ্যের মূল্য ১ টাকা থেকে ৪ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষজন নাম মাত্র মূল্যে পরিবারের জন্য নিত্যপণ্য ও নতুন কাপড় কিনে নিচ্ছেন।
দেশ বিদেশে ভিন্নতর ও অভিনব সব আইডিয়া নিয়ে সেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিদ্যানন্দ। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কেউ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তখন জীবনবাজি রেখে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসমরে যুদ্ধ করে সাধারণ মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নেয় এই প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবায় তাদের অসামান্য সব অবদানের জন্য ২০২৩ সালে সরকার তাদের একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও ২০২২ সালে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কতৃক জাতীয় মানবকল্যান পদক ও ২০২১ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কতৃক “কমনওয়েলথ পয়েন্টস অফ লাইট” পদকে ভূষিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।