দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে চলমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম-এর শিক্ষকদের রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্ত ও প্রকল্পটিকে আউটসোর্সিংয়ের আওতার বাইরে রাখার দাবিতে রাঙামাটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শিক্ষকরা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
এসময় তাদের পক্ষ থেকে আউটসোর্সিং বাতিল, সকল জনবলকে রাজস্বভূক্ত করা, কর্মী ও কেয়ারটেকারদের স্কেলভূক্ত করা, শিক্ষকের সম্মানী বৃদ্ধি, ঈদের পূর্বেই প্রকল্প অনুমোদন করা এবং সকল শিক্ষক, কেয়ারটেকার ও জনবলের বকেয়াসহ বেতন ভাতাদি পরিশোধের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পটি আতীয় শিক্ষানীতির আলোকে সাড়া দেশের মসজিদ অবকাঠামো ব্যবহার করে দারিদ্র্য, সুবিধা বঞ্চিত ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদেরকে বিনামূল্যে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোগ, কিশোর কিশোরী ও বয়স্কদের পবিত্র কুরআন শিক্ষা, নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ শিক্ষা দান করে আসছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, আলেম ওলামা ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত বেকার নারী ও পুরুষের দারিদ্র্যতা দূরীকরণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, একই প্রকল্পে ১ম ও ২য় পর্যায়ের কর্মীরা রাজস্বভুক্ত হলেও ৩য় থেকে ৭ম পর্যায়ের কর্মীরা বছরের পর বছর কাজ করেও থেকে গেছেন বঞ্চনার শিকার। দীর্ঘদিন কাজ করার পরও তাদেরকে রাজস্বখাতের আওতাভুক্ত করা হয়নি। চাকরী জীবনে ১৯৯৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে পরবর্তীতে নিয়োগ প্রাপ্ত কোন জনবলের পদন্নতি হয়নি। জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি দীর্ঘ ৩২ বছর যাবত চলমান থাকলেও প্রকল্পে কর্মরত জনবলের মূল বেতন বছর বছর কখনো বৃদ্ধি করা হয়নি। সরকারের প্রতিটি দপ্তরের কর্মচারীদের মত সমহারে কাজ করেও কেবলমাত্র প্রকল্পে কর্মরত থাকার কারণে বেতন বৈষম্যের স্বীকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। প্রকল্পের বিদ্যমান জনকল অন্যত্র চাকুরীর বয়স হারিয়ে প্রকল্প শেষে চাকুরী হারানোর ভয়ে চরম হতাশায় জীবন যাপন করছে। এছাড়া প্রকল্প কর্মরত জনবলের স্বাভাবিকভাবে ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল, পদোন্নতি না থাকায় সামাজিক মর্যাদাহানিসহ পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অর্থ কষ্টে রয়েছে। একইসাথে দেশের ৯০% মুসলমানের কুরআন শিক্ষাভিত্তিক এই প্রকল্পকে যদি আউটসোর্সিং করা হয়, তা হলে তা হবে চরম বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।
এসময় ইসলামিক ফাউন্ডেশন (মউশিক) রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার মোঃ আলী আহসান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও ফিল্ড সুপাভাইজার মোঃ পেয়ার আহমদের সঞ্চালনার বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ইব্রাহিম, মউশিক শিক্ষক সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ ওমর আলী, বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ কেয়ারটেকার মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা হাসানুর রহমান, কে. এম, জিল্লুর রহমানসহ আরও অনেকে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষক-কেয়ারটেকার ঐক্য পরিষদ নেতৃত্ব ও সদস্যরা।