রবিবার , ১৮ মে ২০২৫ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

রাবিপ্রবিতে ৩৫০ গবেষকের অংশগ্রহণে পর্দা নামলো আন্তর্জাতিক বায়োসায়েন্স কনফারেন্স ও কার্নিভাল’র

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
মে ১৮, ২০২৫ ৮:৩৬ অপরাহ্ণ

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো হয়ে গেলো ৩ দিনের আন্তর্জাতিক বায়োসায়েন্স কনফারেন্স ও কার্নিভাল। এতে দেশি বিদেশি ৩৫০ জনের বেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক অংশ নিয়েছেন। এ কনফারেন্স বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় দিক-নির্দেশনামূলক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা অংশগ্রহণকারী ও আয়োজকদের। বায়োসায়েন্স ও বায়োসিকিউরিটি উদ্ভাবন এবং সহযোগিতা: একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষি দৃষ্টিকোণে অনুসন্ধান- এই প্রতিপাদ্যে এবারের আসরের আয়োজক ছিলো রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ১৬ মে থেকে ১৮ মে তিন দিনের এ আয়োজনে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন সেসনে এতে দেশি বিদেশি ৩৫০ জনের বেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক অংশ নেন। কনফারেন্সে স্হান পায় শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষক ও শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিক গবেষণা প্রজেক্ট । ছিলো কর্মশালা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, পোস্টার প্রদর্শনী এবং বৈজ্ঞানিক আলোচনা। এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে নিজেদের গবেষণা ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অবারিত সুযোগ তৈরির প্রত্যাশা অংশগ্রহণকারীদের।

১৬ মে রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন পার্বত্য উপদেষ্টা। পরবর্তী দুই দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে রাবিপ্রবির নিজস্ব ক্যাম্পাসে। রাবিপ্রবি ও বাংলাদেশ বায়োসেইফটি ও বায়োসিকিউরিটি সোসাইটি (বিবিবিএস) এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই আয়োজন।

আজ শেষ দিনে উক্ত সেশনগুলো সকাল ৯থেকে দুপুর ১ঘটিকা পর্যন্ত রাবিপ্রবি’র একাডেমিক ভবন-১ এর সম্মেলন কক্ষ, কক্ষ নং ১০০১ ও ১০০২ এ নির্ধারিত প্রোগ্রামসুচি অনুযায়ী তিনটি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। টেকনিক্যাল সেশনে কিনোট ও ইনভাইটেড স্পীচসহ সাতাশটি (২৭টি) গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

টেকনিক্যাল সেশনসমূহের চেয়ার ও কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান এবং বাংলাদেশ বায়োসেফটি এন্ড বায়োসিকিউরিটি সোসাইটির সভাপতি ড. আসাদুল গণি; রাবিপ্রবি’র সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন জনাব ধীমান শর্মা ও রাবিপ্রবি’র ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন জনাব সূচনা আখতার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান ও রাবিপ্রবি’র কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ।

কনফারেন্সের শেষ দিনে Drug Discovery and Development; Alternative Medicine and Natural Products in Human, Animal and Environmental Health; AI and In Silico Biology – এই তিনটি মূল বিষয়ের উপর গবেষকবৃন্দ বিভিন্ন শিরোনামে প্রায় ২৭টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া কার্নিভালের শেষ দিনে 3 Minutes Presentation, Idea Contest, Debate for Science (Phase 1 & 2) এবং Moves and Motions of Traditional Healers – সেশনসমূহ অনুষ্ঠিত হয়।

এ আইসিবিসি কনফারেন্সের তৃতীয় দিনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি এবং স্বনামধন্য সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি চট্টগ্রাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রায় বাহাদুর রণদা প্রসাদ ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এর অধ্যাপক-গবেষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

কনফারেন্সের শেষ দিনে ঔষধের আবিষ্কার ও উন্নয়ন, ব্রেস্ট ও জরায়ু ক্যান্সার, পাটের আঁশে কীট-পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, বাত রোগের বিকল্প- ভেষজ চিকিৎসা, ম্যাগনেটিক হাইপারথারমিয়া ট্রিটমেন্ট, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স, সাতকড়া ফলের ফার্মাকোলজিকাল বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ, অরেগানো চাষ, ভেষজ চিকিৎসায় পার্বত্য চট্টগ্রামের টক ফলের ব্যবহার, টেকসই কৃষি গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাম্প্রতিক প্রয়োগ, ফসলের রোগ নির্ণয়ে ডিপ লার্নিং মডেল প্রভৃতি বিষয়ে গবেষকবৃন্দ তাদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

‘Moves and Motions of Traditional Healers’ সেশনে পার্বত্য অঞ্চলের তিনজন বনজ ঔষধের চিকিৎসক নিহার বিন্দু ত্রিপুরা, নবরাণী ত্রিপুরা ও সুগন্ধ তঞ্চঙ্গ্যা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি ও রোগের প্রকৃতি অনুসারে ভেষজ উপাদান এবং ভেষজ ঔষধ তৈরি করার প্রক্রিয়া তাদের নিজস্ব ভাষায় বর্ণনা করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তারা এই চিকিৎসা পদ্ধতি তাদের পূর্বপুরুষ থেকে বংশ পরস্পরায় শিখেছেন এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শেখানোর মধ্য দিয়ে চিকিৎসার এ ধারাটিকে টিকিয়ে রাখতে চান; কারণ ঐতিহ্যবাহী ভেষজ চিকিৎসার উপযোগিতা সমাজে এখনো বিদ্যমান বলে তারা মনে করেন।

কনফারেন্সের বিকালের সেশনে পোস্টার প্রেজেন্টেশন, থ্রি মিনিটস প্রেজেন্টেশন, আইডিয়া কনটেস্ট এবং বির্তক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক এবং রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান।

পোস্টার প্রেজেন্টেশনে প্রথম স্থান অধিকার করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ; থ্রী মিনিট প্রেজেন্টেশনে প্রথম স্থান অধিকার করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জনাব জোবায়ের মাহতাব; আইডিয়া কনটেস্টে প্রথম স্থান অধিকার করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জনাব হুযাইফা আহমেদ এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইপ্সিতা চাকমা আইডিয়া কনটেস্টে দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। বির্তক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং বির্তক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি বিজয়ী হয়। বির্তক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির জনাব ইমরান হোসেন ফাহিম শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়।

এ কনফারেন্সের সমাপনী দিনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বায়োসেফটি এন্ড বায়োসিকিউরিটি সোসাইটির সভাপতি ড. আসাদুল গণি। তিনি এ আয়োজনের ও ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে আরো যৌথভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সমাপনী বক্তব্যে রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান কনফারেন্সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করায় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী এবং রাবিপ্রবি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পৃষ্ঠপোষক ও মিডিয়া পার্টনারদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি কনফারেন্সে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী রাবিপ্রবি’র প্রায় চল্লিশ জনের অধিক শিক্ষার্থী এবং আইসিবিসির উপ-কমিটির সকল সদস্যদের নিরলসভাবে কাজ করায় বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো বিজ্ঞানভিত্তিক তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক কনফারেন্স আয়োজন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স রাবিপ্রবিকে উচ্চ পর্যায়ে নেয়ার সিঁড়ি রচনা করলো এবং এর মধ্য দিয়ে রাবিপ্রবি’র সাথে সারাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও গবেষকদের সাথে যে সেতুবন্ধন রচিত হলো তা পরবর্তীতে আরো সুদৃঢ় হবে।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: