রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল ৮ টার দিকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে সংলগ্ন মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজে অস্থায়ী ভিত্তিতে ‘নিরাপত্তা সেবা কর্মী সংগ্রহ ক্যাটাগীর ৫’ এর দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। এতে ২২ জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। এ দরপত্র জমাদানের শেষ সময় ছিল সোমবার (৯ মে) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। এর মধ্যে দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাজদ্বীপ ট্রেড সার্ভিসেস লিমিটেড।
রাজদ্বীপ ট্রেড সার্ভিসেস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়ন্ত লাল চাকমা বলেন, সকাল ৮ টার সময় দেড় লাখ টাকার পে অর্ডার সংযুক্ত করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মিন্টু মারমা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বরুন নেওয়ারকে সাথে নিয়ে দরপত্র জমা দিতে মেডিকেল কলেজে যাই।
কলেজে প্রবেশ করতে যুবলীগ নেতা শাহ এমরান রোকনের ছোট ভাই শাহ জামান রিপন ১৫-২০ জন যুবক নিয়ে আমাদের পথ গতিরোধ করে দরপত্র প্যাকেটটি ছিনিয়ে নেয়। আমরা দরপত্র জমা দিতে পারিনি। ঘটনার সাথে সাথে আমি ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ দিই। পরে এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করি। এরপর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে দরপত্র পক্রিয়া বন্ধ রাখতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
খবর পেয়ে কোতয়ালী থানার পুলিশের উপ পরিদর্শক সাগর বড়ুয়া মেডিকেল কলেজে যান। সকাল ১০ টায় মেডিকেল কলেজে শাহ এমরান রোকনকে দেখা যায়। এ সময় তিনি কলেজের তিন তলায় উঠে দরপত্র জমাদানের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান।
এ সময় তার কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কলেজে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। সে সময় রোকন পুলিশকে বলেন সে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে মেডিকেল কলেজে তার কাজ চলছে। তবে কলেজে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি।
মেডিকেল কলেজের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন দরপত্র পদ্ধতি এমন যে, যেকোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে না। এতে অংশ নিতে হতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে লাইসেন্স লাগে। রাঙামাটির একমাত্র রাজদ্বীপ ট্রেড সার্ভিসেসের এটি আছে আমি জানি। মুলত রাজদ্বীপকে কাজ পাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য এ কাজ করা হয়েছে।
সাগর বড়ুয়া বলেন, আমরা কলেজের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছি। সেখানে দেখা গেছে ১৫-১৬ জনের একদল যুবক জয়ন্ত লালের কাছ থেকে দরপত্র কেড়ে নিয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি আমরা।
সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, শাহ এমরান রোকনের ছোট ভাই শাহ জামান রিপন সকালে ১৫-২০ জন যুবক নিয়ে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থান নেয়। সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে জয়ন্ত লাল ও মিন্টু মারমা দুটি মোটর সাইকেল নিয়ে মেডিকেল কলেজে ফটকে প্রবেশ করা মাত্র শাহ জামান রিপন হাতের ইশারায় তার সহযোগীদের মোটর সাইকেলগুলোকে আক্রমণের নির্দেশ দেয়।
এ ব্যাপারে জানতে রিপনের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে রিপন কল রিসিভ করেনি।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া বলেন, ঘটনাটি কলেজের ভিতর হয়নি। তবে তদন্তে এ ধরণের ঘটনার সত্যতা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।