বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ উৎসব সাংগ্রাই উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধমূর্তি স্নান পূজা ধর্মীয় উৎসবটি পালন করেছে।
এই দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল ৩টা বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার থেকে খালি পায়ে হেঁটে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় উজানি পাড়া সাঙ্গু নদী খেয়া ঘাটে এসে শেষ হয়।
এ সময় শত শত নর-নারী, দায়ক-দায়িকা, উপ-উপাসীকাবৃন্দ চন্দন মিশ্রিত ও ডাপের পানি নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শত বছর আগে থেকে এই পূজা করে আসছে। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এই বুদ্ধের স্নানের পানি পান করলে রোগ-ব্যাধি, বিপদ-আপদ ও জরা- ব্যাধি আর যে কোন অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি পাবে।
এসময় অনুষ্ঠানস্থলে আগত গুরু ভান্তেগণ সকলেই উদ্দেশে ধর্ম দেশনা দেন এবং সবাই সমবেত হয়ে দেশ ও জাতির জন্য শান্তি মঙ্গল কামনা করেন।
এরপর শুরু হয় চন্দন মিশ্রিত পানি দিয়ে বুদ্ধমূর্তি স্নান। প্রথমে উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মগুরু ডঃ উ সুওয়াইন্না ‘আসাং ম্রা’র (বুদ্ধ মূর্তির) গায়ে পানি ঢেলে স্নান করান। পরে একে একে পুণ্যার্থীরা ইহকাল পরকাল পুণ্যময় লাভের জন্য স্নান করেন বুদ্ধ মূর্তিকে।
এর পরপরেই বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের তরুন-তরুনীদের বর্ষবরণ জলকেলী উৎসব শুরু হয়। এসময় মেতে উঠেন আনন্দ-উল্লাসে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরে ন্যায় এবারেও তিনদিনব্যাপী মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবে আজ ২য় দিন। সাংগ্রাই উৎসবে মূল আকর্ষণ হচ্ছে মৈত্রী পানি বর্ষণ যা বাংলা ভাষা (জলকেলি)। আগামীকাল বিকেলে ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে নিজেদের ঐতিহ্য পোশাক পরিধানে এই জলকেলি অনুষ্ঠানে অংশ নেবে মারমা সম্প্রদায়ে তরুণ-তরুনীরা। পাশাপাশি পাহাড়িদের ঐতিহ্য খেলাধুলা আয়োজন করা হয়েছে। আর পাহাড়ের এই ভিন্নধর্মী বর্ষবরণের এই উৎসবটিকে দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন সর্বস্তরে মানুষ । ধর্ম দেশনা শ্রবণের মধ্য দিয়ে মারমা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণের উৎসবের ইতি টানা হবে।