খাগড়াছড়িতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি আবারও সামনে এনেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বুধবার (৯আগস্ট) সকালে “আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি” এ প্রতিপাদ্যে জেলা শহরে মিলনপুরস্থ মারমা উন্নয়ন সংসদ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার চাইলে পার্বত্য চুক্তির মতো আদিবাসীর স্বীকৃতি বিষয়েও কাজ করতে পারে, কিন্তু তা করছে না। এদিকে পার্বত্য চুক্তিতেও ৭২টি ধারার কথা উল্লেখ থাকলেও ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে, বাকীগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। অবিলম্বে আদিবাসী স্বীকৃতি সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করার আহবান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমা।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা।
সভায় আরো বক্তব্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিন্ধু কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রত্না তঞ্চঙ্গ্যাঁ, দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা জিমি প্রমুখ।
এসময় রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যয় চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি প্রীতিময় চাকম্। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবীতে সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজ এলাকা থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।
পরে য়ংড বৌদ্ধ বিহারের সামনে এসে মানববন্ধনে অংশ নেন আদিবাসীরা। এসময় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি চাইথোয়াই মারমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নারী অধিকার নেত্রী নমিতা চাকমা, মারমা যুব ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারি সাথোয়াই মারমা, ক্রাচিং মারমা প্রমূখ। বক্তারা অবিলম্বে দেশের সকল আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাববি জানান।
একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী করেন। অন্যদিকে আদিবাসী স্বীকৃতি আদায়ের অন্তরালে দেশ বিভক্তির চক্রান্তের প্রতিবাদে শহরের শাপলা চত্বরে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো: মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আলমগীর কবির, প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ, এসএম মাসুম রানা ও লোকমান হোসেন প্রমূখ।
বক্তারা সংবিধান পরিপন্থী ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।দিবসটি উপলক্ষে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।