রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার পূর্বে মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি গ্রাম। গ্রামটি জুরাছড়ি ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান। এই গ্রামে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম পাহাড়ি উঁচু নিচু কাঁচা রাস্তায় পায়ে হাটা। উপজেলায় পৌঁছাতে প্রায় ৬-৭ ঘন্টা হেটে আসতে হয় এই গ্রামের মানুষের। গ্রামের বৃদ্ধ বিনয় চাকমা (৬৫) দীর্ঘ দিন ধরে জ্বর ও পায়ে ব্যাথার যন্ত্রনায় ভুগছেন। তিনি চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ পেয়ে খুশি হয়েছেন। শুধুই বিনয় নয়, মধুমালা, জরিনা, স্নেহ কুমার চাকমাসহ অনেকেই দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি হয়েছেন।
শুক্রবার ও শনিবার (১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর) দু’দিন ব্যাপী মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি গ্রামে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং পার্টনারশিপ ফর রেসিলিয়েন্ট লাইফহুডস ইন সিএইচটি রিজিয়ন (পিআরএলসি) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টংগ্যা এই মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারি সার্জন ডাক্তার মোঃ দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ফার্মাসিস্ট অম্লান চাকমা, টংগা পিআরএলসি প্রকল্পের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা,প্যারামেডিক প্রদীপন চাকমা টিমের সদস্যরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা ও বিনা মূল্যে ঔষধ প্রদান করেন।
স্থানীয় কার্বারী রমেশ কান্তি চাকমা বলেন, ৮-১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন কমিউনিটি ক্লিনিক না তাকায় যে কোন অসুখ হলে গ্রামের লোকজন কবিরাজ কিংবা বনজা ঔষধের উপর নির্ভর করতে হয় তাদের। বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা পেয়ে এলাকার মানুষের অনেক উপকার হয়েছে।
মেডিকেল টিমের ডাক্তার মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় শতাধিক শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও গর্ভবতী মাদের চিকিৎসা সেবা এবং বিনা মূল্যে ঔষধ প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, এমন দুর্গম এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
মৈদং ইউপি চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা বলেন, যেখানে চিকিৎসা সেবার কোন সুযোগ নেই এমন এলাকায় দক্ষ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ। চিকিৎসা সেবার প্রদানকারিদের এলাকাবাসী পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।