পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার দীঘিনালা মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং এর নামে টাকা তুলেছে দীঘিনালা মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
দীঘিনালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি একাধিক পরিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীন জনিত কারনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, দীঘিনালা মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের থেকে কোচিং বাবদ ২ হাজার টাকা নিয়েছে। নিয়মিত কোচিং ক্লাস করানো হয় না। কোচিং ক্লাস করানোর জন্য শিক্ষকদের ডেকে আনতে হয়। ১০ দিন কোচিং ক্লাস করানো হয়েছে মাত্র। আমাদের মাঝে অনেকে টাকা দিতে না পারায় শিক্ষকরা ক্লাসে অনেক চাপ প্রয়োগ করেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী টাকা দিতে না পারায় কোচিং আর হবে না বলে জানানো হয। এসময় ঐ শিক্ষার্থীরা অন্তত ১শত ৬০ জন থেকে দুই হাজার করে টাকা তুলা হয়েছে বলে জানান।
এসময় আরো অভিযোগ করে বলেন, এর আগে স্কুলে ইউনিক আইডি বাবদ ৫০ থেকে ৭০ টাকা তুলা হয়েছে। টেস্ট পরিক্ষার জন্য দুইশো করে টাকা দিয়েছি। সামনে পরিক্ষার রেজিস্ট্রেশন বাবদ ২ হাজারের কম বা বেশি লাগতে পারে বলে জানানো হলো। প্রতি মাসে স্কুলে পানির জন্য টাকা আদায় করা হয় অথচ নিয়মিত পানি দেয় না। আমাদের বাবা-মা’র পক্ষে এভাবে টাকা সংগ্রহ করা অসম্ভব হয়ে দাড়াচ্ছে। স্যার’দের কিছু বলতে চাইলে স্কুল থেকে টিসি দিয়ে দিবে বলে ধমক দেয়।
এসময় একাধিক শিক্ষার্থী আরো অভিযোগ রাখেন, বিদ্যালয় থেকে জেএসসি সার্টিফিকেট তুলতে গেলে ৩শত ৫০ থেকে ৫শত ৫০ টাকা করে রাখা হয়। পরিক্ষার এডমিট তুলতে ৫০ টাকা করে রাখা হয়। এই বিষয়ে আমাদের প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার চাকমা’কে জানাতে গেলেই তিনি আমাদের কোন কথা শুনেন না । আরো বাজে ব্যবহার করেন। ক্যারিয়ারের চিন্তা করে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছি না।
দীঘিনালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার চাকমা’কে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি, মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েও এই শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দীঘিনালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা ও খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসার কাছে কোচিং এর টাকা ও শিক্ষার্থী’দের সাথে প্রধান শিক্ষকের অসদাচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোচিং এর নামে টাকা তুলার বিষয়টি কিছুদিন আগে জেনেছি। আমি শিক্ষক সাধন কুমার চাকমা’র সাথে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন জানুয়ারী মাসে অভিবাবক সমাবেশ করে কোচিং ক্লাস বাবদ টাকা তুলেছেন। তিনি ৪০ জন শিক্ষার্থী থেকে টাকা তুলেছেন বলেও জানিয়েছেন। অতিরিক্ত টাকা গুলো মাসিক ফিস বাবদ কেটে নিবেন বলে জানিয়েছেন। আমি ২০ অথবা ২২ এর্প্রিল তারিখে দীঘিনালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যাবো এবং যাদের থেকে টাকা তুলা হয়েছে তাদের টাকা গুলো ফিরিয়ে দিতে বলবো এবং আমি বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে জানাবো। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আচারনের বিষয়টি দুঃখজনক, যেখানে শিষ্টাচার নৈতিকতা এবং ব্যবহার শিক্ষক থেকে পাবে সেখানে এরকম আচারন দুঃখজনক। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে তাকে বুঝাতে চেষ্টা করবো।
দীঘিনালা মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) সভাপতি চয়ন বিকাশ চাকমা জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিংয়ের নামে নিয়মবহির্ভূত টাকা আদায় করার সুযোগ নেই। বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের টাকা আদায়ের কথাটি শুনেছি। বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। বিদ্যালয় খোলা হলে অবিভাবকদের ডেকে টাকা পরিশোধ করার জন্য বাধ্য করা শিক্ষকদের।