আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা বাতিলসহ ৭ দফা দাবীতে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে বুধবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত রাঙামাটিতে হরতালের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
সোমবার সকালে রাঙামাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মজিবুর রহমান। তিনি বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সকল দাবীকে উপেক্ষা করে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে ভূমি কমিশনের সভা আহবান করেছে কমিশনের চেয়ারম্যান। এ সভা হতে দেওয়া হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ এ সভা প্রতিহত করবে। এরই অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ আগামী মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টাকা থেকে বুধবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত হরতাল ঘোষণা করেছে।
হরতাল চলাকালীন রাঙামাটি শহরে সমাবেশ চলবে ঘোষণা দেন মজিবুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে মজিবুর পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত ভূমি ব্যবস্থা, রাজা, হেডম্যান প্রথা বাতিল, ১৯০০ সালের শাসন বিধি বাতিল, ভূমি ব্যবস্থাপনার সকল দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তরের দাবী জানান।
মজিবুর রহমান অভিযোগ করেন নাগরিক পরিষদ একাধিকবার পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করেছে। এ সময় কমিশনের চেয়ারম্যান পার্বত্য ভূমি কমিশনের কাজ বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তিনি কমিশনের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার দাবী, পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন থাকলে পাহাড়ের সকল মানুষ ভুমির অধিকার হারাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ৭দফা দাবী গুলো হচ্ছে ১. পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতি গোষ্ঠী থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিশ্চিত করতে হবে । ২. পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি নিরোধ নিষ্পত্তি এর কার্যক্রম শুরুর পূর্বে , ভূমির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করতে হবে । ৩. জাতি – ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির উপর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ এর ধারা সমূহ বাতিল করতে হবে । ৪. পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রবর্তন করতে হবে এবং সমতলের ন্যায় জেলা প্রশসকগণকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার দিতে হবে । ৫. কমিশন কর্তৃক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কারনে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারী খাস জমিতে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে । ৬. পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত রীতি , প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা কর হবে । ৭. বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তীকৃত অথবা কবুলিয়ত প্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না ।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর জামান ডালিম, যুগ্ম-সম্পাদক রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সাদারণ সম্পাদক এস এম মাসুম রানা, রাঙামাটি জেলা কমিটির মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আসমা মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলী আক্তার সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।