রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে সূর্যদেবকে পূজা দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ উপলক্ষে বাঙালহালিয়ায় হাজারো পুণ্যার্থী হাজির হন। পূজা ঘিরে সূর্যব্রত মেলা বসে। মেলায় নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেন।
রবিবার (৯ ফ্রেব্রুয়ারি) বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের বাঙ্গালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ মেলা বসেছে।
প্রাচীনকাল থেকে আপন ঐতিহ্যে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শেষ রবিবার সূর্যপূজা উপলক্ষে বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নেরএ মেলায় দূর-দুরান্ত থেকে আসা পাহাড়ি-বাঙালিসহ পূণ্যার্থীদের আগমনে সূর্য ব্রত মিলন মেলা হয়। তারপরও রাজস্থলী উপজেলা বাঙ্গালহালিয়া বাজারে বিভিন্ন অঞ্চলে সূর্যব্রত পূজা ও মেলা টিকে আছে এখনো। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এ মেলায় এসে পরিবেশকে করে তোলেন উৎসবমুখর।
আপন সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে এ মেলায় গৃহস্থালী জিনিসপত্র থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী নানান সামগ্রী পাওয়া যায়। ফুলের ঝাড়ু, পোড়া আলু, বাঁশ-বেতের তৈরি আসবাবপত্র, শীতল পাটি, তাল পাতার হাত পাখা, মাটির তৈরি তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন রকমের জিনিসপত্রের পসরা নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। ছোটদের বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলার ব্যবস্থা।
জানা যায়, এই মেলার শুরু হয়েছে স্থানীয়দের মতে, ৩৫ বছর যাবত থেকে, মাঘ মাসের শীতের তীব্রতায় গ্রামের মানুষ যখন জবুথবু হয়ে পড়ে তখনই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আরাধনা করেন সূর্য দেবের। সনাতন ধর্মের নর-নারীরা উপবাস রেখে মনোবাসনা পূর্ণ করতে সূর্যদেবতাকে তুষ্ট করার অভিপ্রায়ে নানা উপাচারে উৎর্সগ করেন। সে সব উপাচার একের পর এক সাজিয়ে রাখায় তা সূর্যখোলা নামেও পরিচিত। সেই থেকে প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শেষ রবিবার পূজার প্রচলন ঘটে। কালক্রমে তা উৎসবে পরিণত হয়। এর থেকেই সূর্যের ব্রত মেলা হয়।
এ উপলক্ষে ফসলশূন্য জমিতে বসে মেলা। মেলা বসার ফলে সে জমিটিও সূর্যব্রত বিল নামে পরিচিতি লাভ করে। সুষ্ঠুভাবে মেলা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয় মেলা উদযাপন কমিটি। পুরো মেলায় সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
স্থানীয় মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর মাঘী শুক্লা তিথিতে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সূর্যদেবের পূজা দেন। এ পূজা ঘিরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী সূর্যব্রত মেলা হয়। আমরা প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ক্রমে সহযোগিতা পেয়েছি, এলাকা গণমান্য ব্যক্তি সর্বস্তরের জনসাধারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন করতে পেরেছি সেজন্য সকল প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।