পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে রাঙামাটিতে নানান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার পার্বত্য চুক্তি পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবীতে রাঙামাটি শহরের জিমনেসিয়াম মাঠে গণ সমাবেশ আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি।
এ গণসভায় বক্তারা চুক্তি বাস্তবায়নের ধীর গতিকে সমালোচনা করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবী জানান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি উষাতন তালুকদার।
এ সময় উষাতন তালুকদার বলেন, সরকারের একটি অংশ চুক্তি বাস্তবায়নে চরম বিরোধীতা করছে। এ বিরোধীতার কারণে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক হলেও চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ভাগ কর শাসন কর এ নীতি অনুসরণ করতে সরকারের একটি অংশ পাহাড়ে একের পর এক দল সৃষ্টি করছে। এদের দিয়ে খুন চাদাবাজি করা হচ্ছে। এসব দায় জেএসএসের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে জেএসএসের কোন স্বশস্ত্র দল নেই।যাদের জেএসএস স্বশস্ত্র দল বলা হচ্ছে এরা চুক্তি সমর্থিত কিছু লোক। যারা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র ধরতে বাধ্য হয়েছে। এরা জেএসএসের কেউ না।
জেএসএস জেলা সভাপতি গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে গণ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি খান মাসুদুজ্জামান, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি এড ভবতোষ দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মনি চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অরুন ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমন মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শান্তি দেবি তঞ্চঙ্গা।
এদিকে শুক্রবার বিকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে রাঙামাটি জেলা পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।
এ সময় তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু যারা চুক্তি করেছে তাদের অসহযোগীতার কারণে চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে সব পক্ষকে এক যোগে কাজ করতে হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক হলেও জেএসএসে অসহযোগীতা করছে।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমতাজ উদ্দিন, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙামাটি জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ,রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য মুছা মাতবর, অংসুই ছাইন চৌধুরী ।
এদিকে চুক্তি ২৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সকালে সেনা জোনের উদ্যোগে শান্তি র্যা লী বের করা হয়।সকালে রাঙামাটি সরকারী কলেজ মাঠ থেকে র্যা লীটি প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে রাঙামাটি সেনা সদর জোনে এসে শেষ হয়।
র্যা লীতে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসাই প্রু চৌধুরী, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাশ খীসা, সদর জোন কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আশিকুর রহমান প্রমুখ।
পরে রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের উদ্যেগে অসহায় গরীব প্রতিবন্ধীদের মাঝে মানবিক সহায়তা বিতরণ করা হয়। রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমতাজ উদ্দিন এ সহায়তা বিতরণ করেন। সহায়তার মধ্যে ঢেউটিন, সেলাই মেশিন, সিলিং ফ্যান ও দুস্থ ব্যক্তিবর্গকে এক লাখ টাকা আর্থিক অনুদান।