রাঙামাটিতে এক ধর্ষণ মামলায় আসামির আমৃত্যু যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড হয়েছে। রোববার দুপুরে আদালতের এজলাসে বসে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর রাঙামাটি শহরের শান্তিনগর বাস টার্মিনালে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী মামলার এজাহারকারীর ১২ বছর বয়সী ছেলে সন্তান। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রাঙামাটি শহরের শান্তিনগর বাস টার্মিনালে কাঁচি দিয়ে জিম্মি করে একটি ট্রাকের নিচে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক পায়ুপথে ধর্ষণ করে আসামি মো. ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুক। এতে ভুক্তভোগী পায়ুপথে রক্তাক্ত জখম হয়। এ ঘটনায় পরদিন ১০ অক্টোবর রাঙামাটি সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বাবা মো. আবুল কাশেম। আসামির বর্তমান বয়স ২১ এবং সে রাঙামাটি শহরের শান্তিনগর বাস টার্মিনাল এলাকার আবদুল জব্বারের ছেলে।
মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অরূপ তালুকদারকে। তদন্তকালে আসামি ভুয়া জন্ম সনদ দাখিল করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেকে শিশু দাবি করলে জামিন লাভ করেন।
এরপর ২০২১ সালের ১০ আগষ্ট আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু দমন আইন ২০০৯’এর ৯(১) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় আসামি রিয়াদ প্রাপ্ত বয়স্ক ছিল। তারই ভিত্তিতে রাঙামাটি জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নিজে বাদী হয়ে আসামি ও তার বাবা আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে আদালতে জাল জন্ম সনদ দাখিলের অভিযোগে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। এতে একই সালের ১৭ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আদালতে অভিযোগ গঠিত হয়। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য এজাহারকারী, ভুক্তভোগী, চিকিৎসক ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ৯ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামি মো. ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’এর ৯(১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
মামলায় অপরাধের দায়ে আসামিকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানাসহ আমৃত্যু যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের রায় দেন আদালত। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. সাইফুল ইসলাম অভি এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী রাশেদ ইকবাল ও কামাল হোসেন সুজন উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আদালতের আদেশে আসামিকে রাঙামাটি জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে বলে জানান পিপি অ্যাাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।