প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পার্বত্য নগরী বান্দরবান। আর পাহাড়ে শীতের আগমনীতে প্রকৃতি ছড়াচ্ছে নতুন রূপ। এই শীতের মৌসুমে পাহাড়, নদী আর ঝর্ণাসহ প্রকৃতিতে এসেছে এক অনাবিল সৌন্দর্যে ভরপুর ।
ভোরে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ দিয়ে বের হলে, শীতের কুয়াশার স্তর এত ঘন থাকে যে নিকটস্থ ছাড়া দূরের কোনকিছুই দেখার বা বুঝার উপায় নেই। তখন কনকনে ঠান্ডা আর চারদিকের ঘন কুয়াশা পাহাড়কে ঢেকে রাখে।
পাহাড়ের এই রূপ মুগ্ধ করবে যে কাউকে। কিন্তু পাহাড়ের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান ও ভয়াবহ বন্যায় পাহাড়ী ঢলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সহ নানা কারণেই পর্যটক শুণ্য বান্দরবান।
বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপড়তা বৃদ্ধিসহ সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হওয়ায় আবারো আগের সেই চেনা রুপে ফিরেছে পর্যটন স্পট গুলো। এবার সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিজয় দিবস মিলিয়ে টানা ছুটি।
এর ফলে বর্তমানে বান্দরবানে বেশীর ভাগ আবাসিক হোটেল রির্সোটে ৭০-৮০ শতাংশ বুকিং।
র্দীঘ ১০ মাস পর এমন আশানুরুপ পর্যটকদের আগমণ দেখে খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে নির্ভিগ্নে ভ্রমণ করতে পেরে মুগ্ধ পর্যটকরা। সংশ্লিষ্টরা জানায়, পাহাড়ের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান ও ভয়াবহ বন্যায় পাহাড়ী ঢলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধের কারণে কমতে থাকে পর্যটক।
বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যটন স্পট শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক, নীলগীরী, নীল দীগন্ত, বগা লেক কেওকাড়াডং সহ পর্যটকদের পদচারনায় মুখোর এসব স্থান। বান্দরবান শহরের কাছে পর্যটন স্পট নীলাচলে ঢাকা যাত্রাবাড়ি থেকে স্ব-পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা জামাল উদ্দিন বলেন, বাচ্চাদের এই মাসে স্কুল বন্ধ থাকাতে পরিবার নিয়ে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছি।
ভোরে চাঁদের গাড়ি যোগে আঁকাবাঁকা চিম্বুক সড়কে পাহাড়ের পথ দিয়ে যাওয়ার সময় সারিসারি ঘন কুয়াশা ভেলায় সবচেয়ে আমাদের কাছে ভালো লেগেছে। বান্দরবান জিপ-মাইক্রোবাস মালিক সমিতির কাউন্টারের দ্বায়িত্বে থাকা কামাল হোসেন বলেন, বান্দরবানে সবকিছু মিলে প্রায় ৫০০টি পর্যটকবাহী ভাড়া চালিত গাড়ি আছে। দীর্ঘদিন পর এই ছুটিতে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ৩০০টিরও বেশি পর্যটকবাহী গাড়ি বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন স্পটের উদ্দেশ্যে স্টেশন থেকে ছাড়ছে।
তবে পর্যটকদের জন্য আরেকটি আকর্ষণীয় স্পট হচ্ছে রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাকুম। নিরাপত্তা জনিত কারণে সেটি এখনও বন্ধ আছে। দেবতাকুম উন্মুক্ত করে দিলে আরও বান্দরবানে পর্যটকের আগমণ ঘটবে বলে আসা করছি।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন পর্যটক তেমন আগমণ ঘটেনি। এই ছুটিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ হোটেলের কক্ষ বুকিং হয়েছে।
এভাবে ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার আইচ জানান, শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে এই ছুটিতে দীর্ঘদিন পর বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
পর্যটকরা যাতে নির্বিগ্নে ঘুরতে পারে সে জন্য সর্বদ্বায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।