ঐতিহ্যবাহী হালদা নদী বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ নদী এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য হালদার ভূমিকা অপরসীম। এই নদীর স্বতন্ত্র অবস্থা যেন বিনষ্ট না হয়, এখানে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বৃক্ষ নিধন রোধ করা ও বনায়ন তৈরী করা, বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটা বন্ধ করা, তামাক চাষ না করা, নদীর যাতে দূষণ না হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়গুলো নিয়ে সকলকে কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে রামগড় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র ও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অংশীজনদের উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মৎস্য অধিদপ্তর এর হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর সহযোগীতায় রামগড় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. রাজু আহমেদ।
প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে হালদানদীর উৎপত্তিস্থল রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা ছোট বেলছড়ির হাসুকপাড়া নামক স্থান সুরক্ষা ও সংরক্ষিত এলাকা গোষণায় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে উৎসস্থল ও এর আশপাশের পাহাড়-টিলা এলাকা চিহ্নিত করে ঐ এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা। প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য উপযোগী বৃক্ষরোপণ করা হবে। উৎপত্তিস্থলের স্থানীয়দের পূর্ণবাসন করে পানির গতিপথ বাধাহীন রাখতে বাঁধ বা অন্য সব প্রতিবন্ধকতা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কয়েকদাপে সরেজমিনে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে বেশ কিছু পরিকল্পনা ও প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তারা।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মনোয়ার হোসেন এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, হালদা প্রকল্পের পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা এনএসআই যুগ্ন পরিচালক নাছির মাহমুদ গাজী, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে হালদার পাড়ের বাসিন্দা, মৎসজীবী, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।