রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে উপজেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের যৌথ আয়োজনে আজ সোমবার (৩০ জুন) উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে “স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের সাইন্টিফিক অফিসার নাসিম আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় নাসিম আহমেদ ‘উন্নত চুলা’ ও ‘বায়োগ্যাস প্লান্ট’ স্থাপনের গুরুত্ব, উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “উন্নত মানের চুলা ব্যবহারে জ্বালানি খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয় এবং এটি পরিবেশবান্ধব। সাধারণ মানের চুলায় প্রচুর ধোঁয়া ও কালি নির্গত হয়, যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। উন্নত চুলার ব্যবহারে গৃহিণীদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, হাঁড়ি-পাতিল কালো হয় না এবং এটি ‘গ্রীনহাউজ ইফেক্ট’ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
বায়োগ্যাস প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, “প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো বায়োগ্যাস দিয়েও রান্না করা যায়। বায়োগ্যাস দিয়ে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, যানবাহন চালানো, খাদ্যশস্য সংরক্ষণ এবং ইনকিউবেটর পরিচালনাও সম্ভব। এছাড়া বায়োগ্যাস রেসিডিউ ব্যবহার করে উন্নতমানের জৈব সার, মাশরুম চাষ, মাছ চাষ, মুক্তা চাষ, কেঁচো চাষ, হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য উৎপাদন এবং বীজ অংকুরোদগম করা যায়।”
তিনি আরও জানান, জ্বালানি গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (আইএফআরডি) ইতোমধ্যে এডিপি অর্থায়নে ৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বায়োগ্যাস প্রযুক্তি সম্প্রসারণের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এছাড়া পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে আরও ২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আইএফআরডি সারাদেশে মোট ২৯,৭৯১টি পারিবারিক সাইজের বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছে।
পরিশেষে সেমিনারটি স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।