জন্মের পরে বাবাকে চোখে দেখেনি, আর তিন বছর আগে হারালো মাকে। কঠোর দারিদ্রকে জয় করে ২০২৩ এ প্রকাশিত এইচএসসি ফলাফলে কাপ্তাই কর্ণফুলী সরকারি কলেজ হতে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলো চশিংমং মারমা।
তিনি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের মুরালীপাড়ার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পিতা মংমিচিং মারমা জীবিত আছেন কিনা এখনো সন্ধান দিতে পারেনি চশিংমং মারমা। তার মাতা মৃত মেবুচিং মারমা বিগত ৩ বছর আগে পরলোক গমন করেন।
বৃহস্পতিবার ( ৯ ফ্রেব্রুয়ারী) মুঠোফোনে কথা হয় চশিংমং মারমার সাথে। তিনি জানান, আমি আমার জন্মের পর পিতাকে দেখেনি। মার মুখে শুনেছি তিনি আমাদের ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তিনি আদো বেঁচে আছেন কিনা জানিনা। বিগত ৩ বছর আগে আমি মাকে হারায়। আমরা দুই ভাই বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারে বর্তমানে আমি একা। টিউশন করে লেখাপড়া খরচ চালাতাম। তবে আমার বোন এবং বোনের স্বামী আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন।
আজ আমার জিপিএ-৫ অর্জনের পিছনে আমার কলেজ এর শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি। স্যাররা আমাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা দিয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে স্যারেরা আমাকে সবসময় মানসিকভাবে শক্তি যোগাতেন। আমি আজ এই অর্জনে আমার হারানো মাকে স্মরণ করছি। মায়ের আর্শীবাদ ও স্যারদের আর্শীবাদ ছিলো বলে আমি আজ ভালো ফলাফল অর্জন করেছি। বিশেষ করে আমি আমার প্রাইভেট স্যার আনোয়ার স্যারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।
চশিমং মারমা আরো জানান, ভবিষ্যৎ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে আমার। আমি আইন বিভাগে লেখাপড়া করে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
কর্ণফুলী সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ এ এইচ এম বেলাল চৌধুরী জানান, চশিংমং অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছেলে। সে জীবনে এত সংগ্রাম করার পরেও নিয়মিত কলেজে আসতো, ক্লাস করতো। প্রতিটি শিক্ষকের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো তার। এছাড়া চশিংমংকে আমি উপবৃত্তি এবং কলেজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে সহযোগিতা করেছি। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।