বুধবার , ২২ নভেম্বর ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

আবারো চ্যালেঞ্জের মুখে দীপংকর; দীপংকরের পরাজয় চায় জেএসএস; সুযোগ নিতে চায় বিদ্রোহীরা

প্রতিবেদক
হিমেল চাকমা, রাঙামাটি।
নভেম্বর ২২, ২০২৩ ৯:২৪ অপরাহ্ণ

রাঙামাটি আসনে আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন রাঙামাটির বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। দলের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ নিয়ে দলটির ভিতরে এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেন দলীয় মনোনয়ন পেলেও নির্বাচন জয় নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।

অথচ রাঙামাটি আসনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয় দীপংকর তালুকদারই একক প্রার্থী হবেন।

কিন্তু তফসিল ঘোষণার পরপরই দলের ঐনক্য দেখা দেয়। সর্বশেষ তথ্যমতে জেলা আওয়ামীলীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১১ জন। এ থেকে ৯ জন দলের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

এরা হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান এমপি দীপংকর তালুকদার, সহ সভাপতি, নিখিল কুমার চাকমা, চিংকিউ রোয়াজা, হাজী কামাল উদ্দীন, যুগ্ম সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা, আওয়ামীলীগ অনুসারী সমরেশ দেওয়ান, জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, অমর কুমার দে,রাঙামাটির সাবেক সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সবাই নির্বাচনের মাঠে থাকার ঈঙ্গিত দিচ্ছেন।

এদের মধ্য নিখিল কুমার চাকমা নাম শুনা যাচ্ছে বেশ। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডর সাবেক চেয়ারম্যান। দীপংকরের সাথে তাঁর বিরোধ কয়েক বছর ধরে দৃশ্যমান। নিখিল কুমার ছাড়াও দলের একাধিক প্রথম সারীর নেতা নিখিল কুমার চাকমার সাথে চলাফেরা করতে দেখা যায়। এ নেতারা দীপংকরের দীর্ঘদিনের একক রাজত্ব মানতে নারাজ।

অন্যরা প্রকাশ্য না এলেও নিখিল কুমার ব্যতিক্রম। ফলে দীপংকর যেখানে সেখানেই প্রতিদ্বন্দী হতে চান ৬২ বছর বয়সী নিখিল কুমার। নিখিলের জনপ্রিয়তার কথা অকপটে স্বীকার করেন দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

অন্যদিকে ৭০ বছর বয়সীয় দীপংকর তালুকদার হাল ছাড়তে নারাজ। একক প্রার্থী হতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন দীপংকর। বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় নিজের পক্ষে ভোট চাইতে দেখা যায় দীপংকরকে। যাঁরা দীপংকরের পক্ষে কথা বলেন তাঁদের সভায় বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টম্বর তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে শুধুমাত্র চিংকিউ রোয়াজা ছাড়া অন্য বক্তারা দীপংকর তালুকদারকে একক প্রার্থী দেওয়ার দাবী জানান।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ বিষয়ে নিখিল কুমার চাকমা বলেন, দলের মনোনয়ন চেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিবেন সেটা আমি বিশ্বাস করি। আমাকে মনোনয়ন না দিলেও নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন তাঁর পক্ষে কাজ করব। আামাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনটি নেত্রীকে উপহার দিতে পারব সেটা আমার আত্মবিশ্বাস আছে।

তবে এ বিষয়ে জানতে দীপংকর তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁর সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। দীপংকর তালুকদারের অনুসারী জেলা  আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর বলেন, দীপংকর তালুকদার ছাড়া বাকীরা সবাই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তারা কেউ নৌকার মনোনয়ন পাবেন বলে আমার মনে হয় না। দীপংকর তালুকদার মনোনয়ন পাবেন সেটা ১০০ ভাগ নিশ্চিত। দীপংকরকে মনোনয়ন না দিলে কি করবেন? জানতে চাইলে মুছা বলেন, নেত্র্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন শেষে তার পক্ষে আমি কাজ করব।

এদিকে এখনো প্রার্থী চুড়ান্ত করতে পারেনি রাঙামাটির অন্যতম শক্তিশালী আঞ্চলিক দল জেএসএস। এ কদিনে দফায় দফায় বৈঠকের পরও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।

তবে জেএসএস এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে সেটা একেবারে নিশ্চিত দলটির সূত্র জানা গেছে। এ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য জেএসএস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ঊষাতন তালুকদার আছেন সবার উপরে।

উষাতন তালুকদারের ৫ বছর সংসদে আসা যাওয়ার অভিজ্ঞা বিবেচনায় এ নেতাকে আবারো সুযোগ দিতে চায় আঞ্চলিক দলটি। ফলে উষাতন তালুকদার জেএসএসের পক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন সেটা এক প্রকার নিশ্চিত।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জেএসএস প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমার সাথে দীপংকর তালুকদারের দুরত্ব না কমায় দীপংকর তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন দিলে জেএসএস হয় একক প্রার্থী দেবে, না হয় দীপংকরকে পরাজয় করতে বিকল্প কোন প্রার্থীকে সমর্থন দেবে। দীপংকর তালুকদারের পরাজয় চায় জেএসএস।

জেএসএসের এমন অবস্থায় আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন ফরম নেওয়া যেকোন প্রার্থী এ সুযোগ নিত পারে বলে ধারণা করছে সূত্রটি।

জেএসসের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, জেএসএস একক প্রার্থী দিলে তারা অতীতের ভূল করবে না। দলটি মনে করে সারা দেশের নির্বাচনকে বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে রাঙামাটি আসনটি নিরপেক্ষ করতে পারে নির্বাচন কমিশন। সে ক্ষেত্রে দীপংকর তালুকদার বাড়তি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জেএসএস প্রার্থী বিজয়ীও হতে পারে।

দলটির এক নেতা বলেন, গত নির্বাচনে জেএসএস প্রার্থী উষাতন তালুকদার হারেন নি। তাকে হারানো হয়েছে।এ কথা অকপটে স্বীকার করেন অনেকে।

কারণ হিসেবে ঐ নেতা বলেন, বিগত নির্বাচনে উষাতন তালুকদার জয়ের যত ভোট দরকার তার চেয়ে বেশী পেয়েছেন। কিন্তু লংগদু ও বাঘাইছড়ি এ দুই উপজেলার ভোট সব হিসাব উল্টে দিয়েছে।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন এ দুই উপজেলা ভৌগলিক কারণে রাঙামাটি পরোক্ষভাবে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।

ফলে গত নির্বাচনে ৮ উপজেলার প্রাপ্ত ভোট নিয়ন্ত্রণে থাকলে লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার ভোট হিসাব পাল্টে দেয়।

এবারের নির্বাচনে এ দুই উপজেলা যেন পুরোপরি রাঙামাটি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং নিরপেক্ষ হয় সে বিষয়টি নজর দিতে চায় জেএসএস।

এবারের নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৭ ভোট। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আ.লীগ প্রার্থী দীপংকর তালুকদার পায় ১,৫৯,০২৯ ভোট। হাতি প্রতীকের জেএসএস প্রার্থী উষাতন তালুকদার পায় ১,০৮,০৩৬ ভোট। ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপির প্রার্থী মনি স্বপন দেওয়ান পায় ৩১,৮৩৭ ভোট।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: