মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান এমপি বলেছেন, কাপ্তাই হ্রদের পুনর্খনন করে গভীরতা বাড়ানো, এর শ্রীবৃদ্ধি ঘটানো, মৎস্য উৎপাদনে আরও কার্যকর ভূমিকা প্রনয়ন করা এবং হ্রদকে দুষণমুক্তকরণ ও মৎস্য অবতরণ ঘাটগুলোকে আধুনিকীকরণে উদ্যোগ নেয়া হবে। ইতোমধ্যে পানি সম্পদ ও অর্থমন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্প জমা হয়েছে। ঢাকায় ফিরেই এই প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করবেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএফডিসি) রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে আয়োজিত কার্পজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করণ ও ভিজিএফের চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কাপ্তাই হ্রদকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান মৎস্য ভান্ডার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে।কাপ্তাই হ্রদের গৌরব ফিরিয়ে আনতে হবে। এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে হবে।প্রকৃতির বৈচিত্রময় স্বোস্বিনী কাপ্তাই লেক কেন যেন স্তব্ধ-বাকরূদ্ধ দিঘি হয়ে গেছে।এই কাপ্তাইয়ের মুখ থেকে যেন আর কথা বের হয় না। তার যৌবন যেন নুইয়ে পড়েছে।এটা দেখে সত্যিই কিছুটা হতাশ হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, তবে আমি বিশ্বাস করি, সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে আমাদের প্রাণের চাওয়া, আমাদের প্রাণের আকুতি বিফলে যেতে পারে না। আমরা সকলেই প্রতিজ্ঞা নিয়েছি, যে আমাদের সেই পুরনো যৌবনপ্রাপ্ত সেই কাপ্তাইকে আবার পূর্বের মতো ফিরিয়ে আনতে চাই। সেজন্য আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে যা যা করা যায় তা আমরা করবো। এই কাপ্তাই হ্রদকে আবার ফেরত এনে বাংলাদেশের মানুষের এই মৎস্য খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে একটা বড় ভূমিকা রাখার প্রকল্প হিসেবে আমরা গ্রহণ করবো।
কাপ্তাই হ্রদে দুষণ বন্ধের আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা কৃষি ফসলে কীটনাশক-অষুধ দিচ্ছেন, এই অষুধে মাছের ক্ষতি হয়। আর এ ধান উৎপাদন করে, ওই চাল খেয়ে শুধমাত্র পেট মোটা করবেন। আমিষ এবং প্রোটিন খেতে হলে এই কাপ্তাইকে বাঁচাতে হবে। এই কাপ্তাইকে কীটনাশক দিয়ে এই পানিকে ধ্বংস করা যাবে না।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন. নৌপুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. আব্দুল আলীম মাহমুদ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহের মহাপরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলী, রাঙামাটি ডিসি মোহাম্মদ মোশারফল হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বক্তব্য রাখেন।
পরে মন্ত্রী মাছের প্রজনন মৌসুম ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত আগামী তিনমাস মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকায় নিবন্ধিত ২৬ হাজার ৮৬৬ জন জেলেকে বিশেষ ভিজিএফের আওতায় মাসে ২০ কেজি হারে চাল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এছাড়া চলতি মৌসুমের জন্য কাপ্তাই হ্রদে ৫৬ মে.টন কার্পজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করার কর্মসুচির উদ্বোধন করেন।