লিনিয়াম বম, রুমা (বান্দরবান)
বান্দরবানে রুমা উপজেলায় রুমানা পাড়া থেকে সুনসং পাড়া পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তার ইট সলিং কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ছয় কোটি টাকার এ কাজ করছে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান (মিলন কোম্পানী)।
২০১৭ সালে ২০শে ডিসেম্বরএ কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
স্থানীয়রা জানায়, গত মার্চ মাসের শুরু দিকে থেকে রুমানা পাড়া হতে সুনসং পাড়ার রাস্তায় ইট সলিংয়ের কাজ শুরু করা করে টিকাদার। রাস্তার সলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত ইটগুলো খুবই নিম্নমান। একটু নাড়াচাড়া করলে ভেঙে যাচ্ছে ইটগুলো।
গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দুপুর দুইটার দিকে সুনসং পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ইটগুলো খুব যত্নসহকারে ট্রাক থেকে নামাচ্ছিল শ্রমিকরা। মাটি পড়লে ভেঙে যাচ্ছে ইটগুলো।
নির্মাণ শ্রমিক মনির হোসেন (৩৫) বলেন, এতো আস্তে করে নামার পরও ইট ভেঙ্গে যায়। ইট গুলোত অনেক অনেক খারাপ, ভালা না।
স্থানীয় বাসিন্দা ভানরাম বম (৪৯) বলেন, আমাদের নতুন রুমানা পাড়া থেকে ডার্জিলিং পাড়া পর্যন্ত ইট সলিং হবে বলে শুনেছি। এখন টিকাদার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিলন সুনসং পাড়ার কবরস্থান এলাকা থেকে ডার্জিলিং পাড়ার দিকে কাজ শুরু করেছে,। প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ইট সলিংয়ের কাজ হয়ে গেছে। ইটের উপরে দুই-তিন ইঞ্চি বেশি হবে মাটি দেওয়া হয়েছে। এজন্য ইট সলিং গুলো সহজে দেখা যায় না। এগুলো ইট সলিং নয়, মাটির সিলিং বলে মনে হয়।
নতুন রুমানা পাড়া বাসিন্দা নরত্লির বম বলেন, যোগাযোগের রাস্তা পেয়েছি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তার কাজ দেখে আর খুশি হতে পারলাম না। এ রাস্তায় হেটে গেলে যে কারোর কাছে রাস্তা ইট সলিং মনে হবে না, মাটি সলিং মনে হয়। একটু চাপ পড়লে ইটগুলো ভেঙে যা্চ্ছে। এ অবস্থা হলে রাস্তাটি অল্প সময়ে আরো কাচা রাস্তায় পরিণত হবে। ঠিকাদার আমাদের কারো কথা শুনছে না। তার ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে।
সুনসং পাড়া কারবারী ( গ্রাম প্রধান) রবার্ট বম বলেন, কয়েকদিন আগে উন্নয়ন বোর্ডের বড় ইঞ্জিনিয়ার কাজ দেখতে এসেছিলেন। কিন্তুআমরা তার সাথে কথা বলতে পারিনি। ঠিকাদার মিলন কৌশল অবলম্বন করে নতুন রুমানা পাড়ার পার্শ্ববতীতে স্থাপিত তাঁর ইট ভাটায় এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার কে নিয়ে যায়। তাই ইঞ্জিনিয়ার স্যারের সাথে কিছু বলা সুযোগ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিলন (মিলন কোম্পানী) মুঠোফোনে জানান ভাল মানের ইট দিয়ে কাজ করা হয়েছে । প্রশাসন যদি বলে, ব্যবহৃত ইট গুলো নিম্ন মানের ইট তাহলে, নিম্ন মানের ইট পরিবর্তে তার রুমানা পাড়ায় ইটভাটার ভাল মানের ইট গুলো ব্যবহার করা হবে। সলিংয়ের সময় বালু পরিবর্তে মাটি দেয়া বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, দুর্গম এলাকা কাজ, তাই সবাইকে বিবেচনা করে কাজের সহযোগীতা করতে হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন রাস্তার সলিং কাজে নিম্ন মানের ইট দেয়া কাজটি বন্ধ করে দিয়ে আসছেন। এ প্রতিবেদক কাজটি ঠিকাদার কর্তৃক চলমান রাখার কথা জানালে ঠিকাদারকে এ কাজে কোনো বিল দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী ইয়াসির আরাফাত।